বিশেষ প্রতিবেদক : গত বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ সিলেট জেলায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যলয় ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক ঔষধের ফার্মেসিতে যৌথ তদারকি করা হয়। মার্কেট সার্ভিল্যান্স এর সময় জেলা কার্যালয় ঔষধ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান, ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক মেহেদী হাসান, অফিস সহায়ক শংকর এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা আক্তার কনা উপস্থিত ছিলেন। ঔষধের ফার্মেসি মনিটরিং কালে মেসার্স টিএ ফার্মেসি প্রোপাইটার রতীশ কুমার চন্দ্র ও মেসার্স গোবিন্দগঞ্জ ফার্মেসি প্রোপাইটার আমির আলী ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ গেট সংলগ্ন সিলেট অবস্থিত ভারতীয় ঔষধ, আন রেজিস্টার্ড বিদেশি ইনজেকশন, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, জেসন কোম্পানির ফলিসন জাতীয় ঔষধ অধিক দামে বিক্রয় করার অপরাধে ড্রাগ act ১৯৪০ এর ১৮ ধারায় প্রসিকিউশন দাখিল করলে ২৭ ধারায় মোবাইল কোর্টে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময়ে নকল ভেজাল, আমদানি নিষিদ্ধ ঔষধসহ অন-অনুমোদিত ঔষধ সামগ্রীর বিষয়ে একটি সচেতনতামুলক প্রচার চালানো হয়। এবিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সিলেট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান আজকের দেশ ডটকম কে জানান, জাতীয় ও জনস্বার্থে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যলয়ের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সিলেট জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান আরও জানান,তিনি গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে সিলেটে যোগদান করেন। সিলেট জেলায় যোগদানের পর মৌলভীবাজার জেলায় বিনা লাইসেন্সে ব্যবসা পরিচালনা করার অপরাধে চারটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মৌলভী বাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ টি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা ৪ টির নাম্বার ও তারিখ যথাক্রমে উল্লেখ করা হলো, ২০২৩/২৬, তারিখ -২২/০৩/২৩, ২০২৩/২৩ তারিখ -২২/০৩/২০২৩,২০২৩/২৪ তারিখ -২২/০৩/২০২৩ এবং ২০২৩/২৫, তারিখ-২২/০৩/২০২৩। এছাড়াও তিনি মৌলভীবাজার জেলায় দুইটি মোবাইল কোট, সুনামগঞ্জ জেলায় একটি মোবাইল কোট এবং সিলেট জেলায় একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একটি সুত্রে জানা গেছে, মো: নাজমুল হাসান মার্চ -২০১৩ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে ঔষধ তত্তাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি ঝিনাইদহ জেলার ঔষধ তত্তাবধায়ক হিসেবে ৩ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ঝিনাইদহে থাকাকালীন তিনি লাইসেন্স না থাকার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০ টি মামলা দায়ের করেন। ঔষধের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিশেষ করে নকল ভেজাল ঔষধ প্রতিরোধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২৭ টি মামলা করেন। ঝিনাইদহে নতুন ঔষধের ফার্মেসি লাইসেন্স প্রদান করেছেন ২৫৭ টি। তার উদ্দ্যোগে জনসচেতনতামুলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২১ টি। একক ও যৌথভাবে ৩৬ টি ঔষধের কারখানা পরিদর্শন করেছেন। নিয়মিত ঔষধের বাজার মনিটরিং কালীন সময়ে নকল ভেজাল প্রতিরোধে ৯৭ টি ঔষধের নমুনা পরিক্ষার জন্য ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে প্রেরণ করেছেন।
এরপর তিনি ঢাকা বিভাগীয় কার্যলয়ে ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে মাত্র ১ বছরে লাইসেন্স বিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঢাকা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩২ টি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। ঢাকা বিভাগীয় কার্যলয়ে ৫ টি জনসচেতনতামুলক সভা করেন। এছাড়াও ২ টি ঔষধের কারখানা পরিদর্শন করেছেন।
সেপ্টেম্বর -২০২০ যশোরের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। ওই সময়ে নকল ভেজাল ঔষধ তৈরির দায়ে জেলা ও দায়রাজজ কোর্টে ৩ টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে পাবনার মেসার্স পাওয়ার ল্যাবরেটরিজ (আয়ু), নারায়ণগঞ্জের মেসার্স হাইম্যাক্স ল্যাবরেটরিজ (ইউনানি) এবং নরসিংদির মেসার্স নেপলস ল্যাবরেটরিজ (ইউনানি)।যশোরে লাইসেন্স বিহীন ঔষধের ফার্মেসির বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১১ টি মামলা দায়ের করেন। যশোরের সুশীল সমাজ ও ঔষধের ফার্মেসি মালিক ও স্থানীয় জনসাধারণের সমন্বয়ে ২৮ টি জনসচেতনতামুলক সভা করেন। নতুন ফার্মেসির লাইসেন্স দিয়েছেন ৩০৭ টি, জিএমপি গাইডলাইন অনুসরণ না করায় ২ টি ঔষধের কারখানা বন্ধ করেছেন। নকল ভেজাল ঔষধ প্রতিরোধে বাজার পরিদর্শনসহ মোবাইল কোর্ট এর মামলা করেন ৪২ টি,এছাড়াও যশোরে থাকা অবস্থায় ঔষধের নকল ভেজাল প্রতিরোধে ৪৫ টি ঔষধের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরিক্ষার জন্য ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে প্রেরণ করেছেন।
এতোদাসংক্রান্ত বিষয়ে সহকারী পরিচালক মো: নাজমুল হাসান এর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি আজকের দেশ ডটকম কে জানান, তিনি যা ই করেছেন তা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশক্রমেই করেছেন।