কাউকে ক্ষমতায় নিতে, কারো বি-টিম হতে বা কারো দাসত্ব করতে আমাদের রাজনীতি নয় – গোলাম মোহাম্মদ কাদের

Uncategorized বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক :  বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, কাউকে ক্ষমতায় নিতে, কারো বি-টিম হতে বা কারো দাসত্ব করতে আমাদের রাজনীতি নয়। আমরা দেশ ও জাতির স্বার্থে রাজনীতি করবো। যারা আমাদের সাথে বন্ধুর মর্যাদায় বন্ধুত্ব করতে চাইবেন, আমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবো। কারো জিম্মি বা ক্রীতদাস হতে রাজনীতি করছি না। রাজনীতিতে বন্ধুত্ব করতে হলে সমানে সমান বন্ধুত্ব করবো, চোখে চোখ রেখে বন্ধুত্ব করবো। রাজনীতিতে বন্ধুত্বের নামে কারো কাছে মাথা নত করবো না। এজন্যই জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভা শেষে ইফতার অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য নির্বাচন একটা ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই পয়সা খরচ করে নির্বাচন করতে আসেন, নির্বাচিত হয়ে সেই পয়সা আদায় করেন। আমরা এমন সংস্কৃতি থেকে রাজনীতিকে বের করতে চাই। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে ত্যাগী নেতা ছাড়া কাউকেই মনোনয়ন দেয়া হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হবে, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে নাকি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা, নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন এবং সিনিয়র নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি বলেন, শক্তিশালী দল হলেই সবাই আমাদের সাথে জোটবদ্ধ হতে আসবে। আর সেক্ষেত্রে শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, প্রতিটি স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনেও জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে হবে। মানুষের আস্থা অর্জনের জন্যও পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে। সংগঠন শক্তিশালী করে আমরা নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে গণমানুষের সামনে গেলে উজ্জল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, সুশাসন, আইনের শাসন এবং ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ গড়ার জন্যই আমাদের রাজনীতি। আইনের শাসন আছে? আইন কী সবার জন্য সমান? দলীয় লোকজনের জন্য এক আইন আর সাধারণ মানুষের জন্য আরেক আইন। এক শ্রেণীর মানুষ বড় লোক থেকে আরো বড় লোক হচ্ছে। তাদের এত টাকা, দেশে তারা টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে। আর বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ প্রতিদিন আরো গরীব হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যা আয় করছে তা দিয়ে এখন অর্ধেক চাহিদা মেটে না। দেশের মানুষের সম্পদের নিরাপত্তা নেই, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই এবং জীবনের নিরাপত্তাও নেই। আমাদের রাজনীতিতে টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, দলবাজী থাকবে না। অন্যায়ভাবে কাউকে কিছু দেয়া হবে না, আবার কাউকে বঞ্চিত করাও হবে না।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, রমজানে অনেক মানুষ চাহিদা মত খাদ্য পাচ্ছে না। আধা পেট খেয়ে রমজান পালন করছে বেশির ভাগ মানুষ। সাধারণ মানুষ দারুন অর্থ কষ্টে আছেন। বিভিন্ন জরিপে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ মাছ-মাংস খেতে পারছে না অনেক দিন ধরে। প্রতিদিনই বেশির ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় এবং অবাস্তব মেগা প্রকল্প তৈরী করে হাজার কোটি টাকা তসরুপ করা হয়েছে।

মেগা প্রকল্পগুলোতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। সময় ব্যায় হচ্ছে অনেক গুণ। দেশের মেগা প্রকল্পগুলো কখনোই লাভজনক হবে না। সরকারের হাতে টাকা নেই, তাই মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। নতুন করে টাকা ছাপানো হচ্ছে আবার বিদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে ডলারের দাম আরো বাড়ছে আর কমে যাচ্ছে টাকার মান। এর ফলে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। আমরা এই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাই। আমরা স্বাধীনতার চেতনায় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ৩২ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে টিকে আছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। দেশের রিজার্ভ নেই, তাই সরকার দেশ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। তিনি বলেন, আগে ৩০ ভাগ ভাসমান ভোট ছিলো।

এখন ভাসমান ভোট ৬০ ভাগের বেশি। তাই ভালো রাজনীতি নিয়ে মাঠে থাকলেই বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা শক্তিশালী দল তৈরী করতে পারলে- জাতীয় পার্টির জোটের প্রেয়োজন হবে না।
কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, জোট নিয়ে চিন্তা করা কিছু নেই। সময় বলে দেবে, কার সাথে জোট হবে। জাতীয় পার্টি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। কয়েক দিন আগে কুটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার অয়োজন করে জাতিকে দেখিয়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টি এখনো অনেক কৌশলী এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি।
এসময় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী।

কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন – এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, খান ইসরাফিল খোকন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস, বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান, শফিকুল ইসলাম মধু, শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আহমেদ, সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন, নূরুল ইসলাম ওমর, এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, কামরুজ্জামান মন্ডল, নুরুন্নবী সুমন, বাবু মহিন্দ লাল ত্রিপুরা, এড খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলু, এডভোকেট হাবিবুর রহমান বাচ্চু, প্রজেশ চাকমা, মোস্তফা জামান লিটন, বীরমুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কবির মোহন, মফিজুর রহমান মফিজ, কামাল হোসেন, বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু, এডভোকেট আব্দুস সালাম চাকলাদার, জাহিদ হাসান, বশির আহমেদ, মোঃ জাফর উল্লাহ, শাহরিয়ার জামিল জুয়েল, মোঃ সিরাজুত সাঈফ, সারোয়ার হোসেন শহীদ, রেজা উর রাজী স্বপন চৌধুরী, জানে আলম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন – সিনিয়র কো- চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কো- চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, সৈয়দ আব্দুল মান্নান, ফখরুল ইমাম এমপি, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, আব্দুস রশিদ সরকার, নাজমা আখতার এমপি, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, সৈয়দ দিদার বখত, জহিরুল ইসলাম জহির, সংসদ সদস্য – শেরীফা কাদের, রওশন আরা মান্নান, নূরুল ইসলাম তালুকদার, আহসান আদেলুর রহমান আদেল ও মাননীয় চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত মাসরুর মওলা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *