নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ নরসিংদীর বেলাবতে আমলাব ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সরকারের গ্রামীন উন্নয়নের একাধিক প্রকল্পের কাজ না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে দেখা যায় যে ২০২১-২২ অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন কর্মসূচীর আওতায় একটি কাবিখা ও ৩টি টিআর বরাদ্দ আমলাব ইউনিয়নে। সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য ০৬/০৬/২০২২ সালে আমলাব ইউনিয়ন পরিষদে সাধারন সভার মাধ্যমে ৩টি টিআর ও একটি কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি করেন। যার মধ্যে টিআর প্রকল্প ৩টি হলো আমলাব ইউনিয়ন পরিষদ ইউপিএস স্থাপন বাবদ ৫০ হাজার টাকা, রাঙ্গারটেক পূর্ব পাড়া ডাঙ্গির বিলের পশ্চিমপাড়ের রাস্তার মাটি ভরাটের জন্য ৫০ হাজার ও রাজারবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাটি ভরাট বাবদ ৭০ হাজার ২৯৮ টাকার টিআর প্রকল্প পায়। তবে উল্লেখিত প্রকল্পের ১০% কাজ করা হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাছাড়া বটেশ্বর ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১টি কাবিখা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হাসান ৩টি টিআর ও বটেশ্বর ঈদগাহ মাঠের মাটি ভরাট না করে বিল তুলে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।
এছাড়াও ১৬/১০/২০২২ইং তারিখে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য (গম) এর বিপরীতে দাখিলকৃত প্রকল্পের অনুমোদন হয়। সেই প্রেক্ষিতে গত ০৬/১১/২০২২ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক আবু নাঈম মোহাম্মদ মারুফ খান স্বাক্ষরিত একটি স্বারকের মাধ্যমে আমলাব ইউনিয়নকে লাখপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল রশিদের বাড়ি হতে উত্তর দিকে ইটের সলিং এর মাথা পর্যন্ত মাটি ভরাটের জন্য ৪.৫৭৩৯ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেয়। কিন্তু এলাকাবাসী জানান আব্দুর রশিদের বাড়ি হতে ইটের সলিংয়ের মাথা পর্যন্ত গত ৩ বছরের মধ্যে কোনো মাটি ভরাট করা হয়নি।
তাছাড়া গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইং তারিখে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো বক্ষণাবেক্ষণ এর টিআর কর্মসূচীর আওতায় আমলাব ইউনিয়ন পরিষদকে উয়ারী ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ৫০ হাজার ও বটতলী মোড়ের পশ্চিম পাশ্বে ইছারটেক রাস্তায় মাটি ভরাটের জন্য ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হাসান উক্ত প্রকল্পগুলোর কোনো কাজ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করে নেয়।
তাই এলাকাবাসী উক্ত প্রকল্পগুলোর উপর জেলা ও বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবী জানাচ্ছে।
টিআর ও কাবিখার কাজ না করে টাকা আত্মসাতের বিষয় সম্পূর্ণ অস্বীকার করে আমলাব ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। তাছাড়া আমি কাজ করেই বিল তুলেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেলাব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উপরোক্ত প্রকল্পের কাজের বাস্তবায়ন ও বিল উত্তোলনের বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমাদের হাতে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ এলাকাবাসীর কাছ থেকে পায়নি। তবে গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ না করে বিল উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেয়। তবে তারপরও যদি কোনো ব্যক্ত ঘটে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা প্রশাসক অফিস থেকে জানানো হয় কাবিখা, কাবিটা ও টিআর এর বরাদ্দ কৃত অর্থ একেবারে কাজ না করে আত্মসাৎ করে ফেলার কোনো সুযোগ নেয়। তারপরও যদি কেউ এ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে ফেলে তাহলে তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। তবে সুস্পষ্ট প্রমান সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।