নাশকতার মামলার প্রধান আসামীকে নিয়ে পুজা মন্ডপ পরিদর্শনে মাদারগঞ্জের ইউএনও

Uncategorized আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

মাসুদুর রহমান  :  নাশকতার মামলার প্রধান আসামীকে নিয়ে পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ইউএনও ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত। এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার (১২ অক্টোবর) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাদারগঞ্জ উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ শুরু হয়েছে। চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে,গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রতন বাদী হয়ে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরনকে প্রধান আসামী করে ৫৩ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাত করে আসামী করে। সেদিন রাত অক্টোবর ৫ তারিখ পর্যন্ত থেকেই পুলিশ এজাহার ভুক্ত ১ জন ও অজ্ঞাত আরো ১৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে প্রেরণ করে৷


বিজ্ঞাপন

ইউএনও মাদারগঞ্জ জামালপুর ফেসবুক আইডি থেকে দেখা গেছে, জোড়খালী, আদারভিটা ও সিধুলী ইউনিয়নের পাল্লাবাড়ী মন্দির, পাল চৌধুরী মন্দির, মোধক বাড়ী মন্দির সহ কয়েকটি মন্দিরে নাশকতার মামলার আসামী নিয়ে পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করার ছবি বৃহস্পতিবার ( ১০ অক্টোবর) রাত ৮:৪০ মিনিটে পোস্ট করা হয়।

এ সময় সহকারী কমিশনার (ভুমি) সায়েদা খানম লিজা,অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর আলম,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইবরাহিম খলিল, পল্লী বিদ্যুৎ এর ডিজিএম ওবায়দুল হক মাসুম, উপজেলা এলজিইডি প্রকোশলী গোলাম কিবরিয়া তমাল, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রহুল আমীন, সমাজ সেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক, উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা দীপা খাতুন সহ পুজা কমিটি এবং উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷ এক ছবিতে দেখা গেছে মাদারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর আলমের পাশেই বসা এবং কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে ইউএনও ও আরো কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় কর্মকর্তার পাশেই দাড়ানো সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আ’লীগের কয়েকজন নেতা জানান,মামলায় আমাদের নাম নেই তবুও আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ ১ নম্বর আসামীকে সাথে নিয়ে প্রশাসন ঘুরে বেড়াচ্ছে।

মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রতন জানান, আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি৷ ইউএনও মহোদয় চেয়ারম্যানকে আগে থেকেই চিনে৷ তিনি তার গাড়ীতে তুলে বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শন করেছে৷ আমি মামলার আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানাই।

এ বিষয়ে সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরন। জানান, আমার বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়েছে আমি শুনেছি। চলাচলে কোন সমস্যা হচ্ছে না৷

এ দিকে কথা হলে মাদারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহেনুর আলম এ প্রতিবেদককে জানান, আমি থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমিও চিনি না তাকে তবে ইউএনও সাহেব তাকে চিনে জানে৷

এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত জানান, আমি এ বিষয়ে জানতাম না যে তিনি মামলার আসামী৷ আর আমাদের সাথে ওসি সাহেবও ছিলেন৷

এদিকে জামালপুর জেলা প্রশাসক হাসিনা বেগম শনিবার এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *