বিশেষ প্রতিবেদক : বিসিকের উত্তরাস্থ বিটিআই আবাসন কোয়ার্টার নকশী ভবন, ফ্ল্যাট নং-২এ (আবাসিক কোয়ার্টার) ১লা অক্টোবর ২০১৮ তারিখ হতে বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মেরাজ উদ্দিন, কর্মী ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক, মনিটরিং সেল) বিসিক, ঢাকা। যার বরাদ্দপত্র স্মারক নং-৩৬.০২.০১৮.০১.০২.০২৩.২০১৮/৮৯৫(১০) তারিখঃ ১৯-০৯-২০১৮।বরাদ্দ প্রাপ্তির শর্ত সমূহঃ (০১) আপনার কর্মস্থল থেকে আপনার বেতনের সার্টিফাইড কপি বাসা বুঝে নেয়ার সময় স্কিটিতে দাখিল করতে হবে এবং পরবর্তীতে বেতন বৃদ্ধি হলে তা স্কিটিকে অবহিত করতে হবে; (০২) বিধিমতে বাসা বুঝে নেয়ার পরবর্তী মাসের ৭ (সাত) তারিখের মধ্যে (ক) বাড়ী ভাড়া, (খ) সরকারের নির্ধারিত গ্যাস বিল, (গ) পানি ও পয়ঃ কর সহ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) সমস্ত টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে অধ্যক্ষ বরাবরে স্কিটি কার্যালয়ে জমা দিতে হবে; (০৩) নিজ উদ্যোগে প্রতিমাসে বিদ্যুতি কপ্রি-পেইড কাডর্ রিচার্জ করে নিতে হবে; (০৪) বাসা বরাদ্দ গ্রহীতা বাসা বরাদ্দ নীতিমালা মেনে চলবেন এবং কোন অবস্থাতেই সাব-লেট/ভাড়া প্রদান করা যাবেনা; (০৫) কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে এ বরাদ্দপত্র পরিবর্তন/বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন; (০৬) বাসা বরাদ্দ বাতিলের জন্য কমপক্ষে ০১ (এক) মাস পূবের্ লিখিত ভাবে অধ্যক্ষ স্কিটি বরাবরে আবেদন করতে হবে।

বিসিকের উত্তরাস্থ বিটিআই আবাসন কোয়ার্টার নকশী ভবন, ফ্ল্যাট নং-২ বি (আবাসিক কোয়ার্টার) বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম, আইন কর্মকর্তা, আইন সেল, বিসিক, ঢাকা। বরাদ্দপত্র স্মারক নং-৩৬.০২.০০০০.০০০.০০২.১৮.০০৭৫.২৪.৫১৯(৬) তারিখ, ০৬-১১-২০২৪ খ্রিঃ যাহা ১লা জানুয়ারি ২০২২ তারিখ হতে ভুতাপেক্ষ বরাদ্দ প্রদানকৃত। বরাদ্দ প্রাপ্তির শর্ত সমূহ (০১) বিধিমতে বাড়ী ভাড়া ও গ্যাস বিল, পানি ও পয়ঃকর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) বেতন থেকে কর্তন করা হবে। (০২) বিদ্যুৎ বিল নিজ উদ্যোগে পরিশোধ করতে হবে। (০৩) বরাদ্দগ্রহীতাকে পরিবারের সদস্য সহ অবশ্যই অবস্থান করতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই সাব-লেট দেয়া যাবে না, এর ব্যত্যয় ঘটলে বাসা বরাদ্দ বাতিলসহ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। (০৪) বরাদ্দগ্রহীতা বাসা বরাদ্দ নীতিমালা মেনে চলবেন।

বিসিকের উক্ত দুজন কর্মকর্তা কোয়ার্টার বরাদ্দ শতর্ ভংগ করে বাসা ভাড়া বাবদ কোন অর্থ পরিশোধ করেন নি। যার কারণে উপব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিন এর নিকট বাসা ভাড়া বাবদ প্রাপ্য বকেয়া অর্থের পরিমাণ ১২ লক্ষ টাকার অধিক। আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম এর নিকট প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ ৬ লক্ষ টাকার অধিক।

সরকারী অর্থ আত্মসাৎ এবং তছরূপ বিষয়ে মতামত জানার জন্য বিসিক চেয়ারম্যান, বিসিকে কর্মরত সকল পরিচালক এবং বিটিআই এর অধ্যক্ষ এর নিকট হোয়াটসএ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হলে বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিকের কোন পরিচালক এর নিকট হতে কোন প্রকার মতামত পাওয়া যায় নি। এমন কি মতামত চাওয়ার ৪ দিনের মাথায় সংবাদ প্রকাশের পূবর্ পর্যন্ত কোন প্রকার প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি-যা একটি প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাপারই বটে। গুরুতর আর্থিক অসদাচারণের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা একটি অশুভ ইংগিত বহন করে।
বিটিআই এর অধ্যক্ষ শফিকুল আলম তার মতামত ব্যক্ত করতে জানান যে, বিটিআই এর আবাসন কোয়ার্টার নকশী ভবন ফ্ল্যাট নং-২এ কোয়ার্টারটি ১লা অক্টোবর ২০১৮ তারিখ হতে তৎকালীন কর্মী ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (বর্তমানে উপ ব্যবস্থাপক) মোঃ মেরাজ উদ্দিনের নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
আবাসিক কোয়ার্টার নকশী ভবন, ফ্ল্যাট নং-২বি কোয়ার্টারটি ১লা জানুয়ারি ২০২২ তারিখ হতে বিসিকের আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম এর নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাসা ভাড়ার টাকা তাদের বেতন বিল হতে কর্তন করার জন্য বিসিকের হিসাব ও অথর্ বিভাগে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। হিসাব ও অথর্ বিভাগের ডিসিএ (বিল) মারুফ হাসান এবং এসিএ (বিল) মোঃ আরিফ আলমগীর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাগণ মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং মাহবুব আলম এর বেতন বিল হতে আবাসন কোয়ার্টার এর বাসা ভাড়া বাবদ অর্থ কর্তন করেন না। এ ক্ষেত্রে আমি আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছি। বাসা ভাড়ার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে না অবগত হওয়ার পরও কেন তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হয়নি-এ বিষয়ে অধ্যক্ষ কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
বিটিআইএর আবাসিক কোয়ার্টারে অবস্থান করে যথা নিয়মে বেতন বিল হতে বাসা ভাড়া কর্তন না করানো এবং বাসা ভাড়া বাবদ অর্থপরিশোধ না করার ব্যাপারে বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম এর হোয়াটসএ্যাপ এবং ই-মেইলে মতামত জানতে চাওয়া হলে উপ ব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিন তার মতামতে উল্লেখ করেন যে, বেতন বিল হতে বাসা ভাড়ার টাকা কর্তন করার দায়িত্ব বিসিকের হিসাব ও অর্থ বিভাগের। সাময়িক অসুবিধার কারণে বিটিআই এর কোয়ার্টার এর অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি, যা আত্মসাতের পর্যায়ে পড়ে না।
আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম হোয়াটসএ্যাপে তার মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে জানান যে, আমি মাত্র ৩ মাস আগে আবাসিক কোয়ার্টার নকশী ভবন, ফ্ল্যাট নং-২বি কোয়ার্টার বরাদ্দ পেয়েছি- আপনি কোথায় ভুয়া তথ্য পেয়েছেন যে, আমি জানুয়ারি ২০২২ হতে এ কোয়ার্টারে বসবাস করছি।
আপনি বিসিক এর আইন সেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কর্মরত থেকে নিয়মনীতি বিরুদ্ধ বে-আইনী কাজে অভ্যস্ত থাকা অবস্থায় আপনি প্রতিষ্ঠানকে কি সেবা প্রদান করবেন? প্রতিবেদকের এ ধরনের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মাহবুব আলম বলেন যে, আমি কোন সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করিনি বা চেষ্টাও করিনি। আমি বাসা ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত অথর্ এখন থেকে নিয়মিত পরিশোধ করে দিবো। তা ছাড়া শিল্প উপদেষ্টার অফিসে আমি যাই না এবং আমি ছাত্রদল করা লোক, আমার নিকট ছাত্র দলের নের্তৃবৃন্দ আসতেই পারে। তবে তাদেরকে সাথে নিয়ে শোডাউন করার বিষয়টি সঠিক নয়।
বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তা মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং বিসিকের আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম কর্তৃক আবাসন কোয়ার্টার এর বরাদ্দপত্রের শতর্ লংঘন করে বাসা ভাড়ার অর্থ পরিশোধ না করার প্রবণতা সরকারী অর্থ আত্মসাৎ এর অপচেষ্টা-যা নীতি নৈতিকতা বিরোধী একটি কাজ। যার কারণে দুইজন কর্মকর্তা স্বপদে বহাল থাকার নৈতিক এবং আইনগত অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। বিসিকের আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম আইন বিরোধী কাজ করেও আইন সেলে কর্মরত থাকার বিষয়টি আশ্চর্যজনক একটি ব্যাপারই বটে।
বিশেষ ভাবে লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে বিসিকের হিসাব ও অথর্ বিভাগের ডিসিএ (বিল) মারুফ হাসান এবং এসিএ (বিল) আরিফ আলমগীর আর্থিক অসদাচরণ করে চলেছেন ক্রমাগতভাবে, যা বিটিআই এর অধ্যক্ষ এবং আবাসন কোয়ার্টার বরাদ্দপ্রাপ্ত মোঃ মেরাজ উদ্দিনের মতামতে পরিষ্কার ভাবে উঠে এসেছে। উক্ত দুইজন কর্মকর্তা বিসিকের সাবেক ও বর্তমান পরিচালকগণ কর্তৃক সরকারী অর্থ আত্মসাৎ কাজে সহযোগিতা প্রদান করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হলেও বিসিক কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি- যা ২০০৯ সালের সংসদীয় আইনের ৪০ নং আইনে বর্নিত ধারা উপধারার সুস্পষ্ট লংঘন।
বরাদ্দপ্রাপ্ত বাসা ব্যবহার করেও সরকারি ভাড়া পরিশোধ না করা এবং সরকারী অর্থ আত্মসাৎ/তছরূপ কাজে সহযোগিতাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিধিগত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বিসিক চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ কামনা করেছেন দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।