মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেই আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার,ফলে অন্যসব রোগী’রা ডেঙ্গু আক্রান্তদের সাথেই থাকতে হচ্ছে। দেখা গেছে,নড়াইল সদর হাসপাতালের চারপাশ জলাবদ্ধতা এবং ময়লা আবর্জনায় ভরা। দেখে যেন মনে হয় মশা উৎপাদনের উর্বর ভূমি। বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগী’রা যেখানে ভর্তি আছেন, তার পেছনের ড্রেনে জলাবদ্ধতা যেমন রয়েছে; তেমনি ঘন ঝোপ-জঙ্গলে ভরপুর চারপাশ। হাসপাতালেই মশা উৎপাদনের এ করুণদশা দেখার কেউ নেই,এমনটি বলছেন,রোগীসহ স্বজন’রা। এক্ষেত্রে নিজেদের জনবল সংকটসহ পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দুষছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, নড়াইল সদর হাসপাতালে ১শ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০জন রোগী ভর্তি থাকছেন। তার ওপর ডেঙ্গু রোগী’র চাপ তো রয়েছেই। এক্ষেত্রে জায়গার অভাবে আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার না থাকায় বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আব্দুল গফফার বলেন,হাসপাতালটি এমনিতেই নিচু জমির ওপর অবস্থিত। তারপর ড্রেনেজ ব্যবস্থাও ভালো নয়। পানি বের হওয়ায় ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এ ব্যাপারে নড়াইল পৌর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলার পরও পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই ড্রেনে পানি জমে মশার বংশবিস্তারের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক,পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও সংকট দূর হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন,এখানে ৩৯ চিকিৎসকের পরিবর্তে কর্মরত আছেন ১৬ জন। আর সরকারিভাবে নিয়োগকৃত পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেই একজনও। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২৮ জন কাজ করছেন এখানে। সিভিল সার্জন ডাক্তার সাজেদা বেগম বলেন,নড়াইলের স্থানীয় লোকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে ঢাকা কিংবা বাইরে থেকে লোকজন আসার ফলে এ জেলায় ডেঙ্গু বেড়েছে এমন নয়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গণসচেতনতার পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। তবে নড়াইলে ডেঙ্গুতে কোনো রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। নড়াইলে জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে রোববার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত ১৬ দিনেই শনাক্ত হয়েছে ৫২জন। এদিকে রোববার একদিনেই ভর্তি হয়েছেন ৯জন। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ছয় মাসে ৩৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।