নইন আবু নাঈম তালুকদার, (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের শরণখোলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম শামীম জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করেছে। এ সময় ওই আসর থেকে নগদ ১৪ হাজার ৪ শত ৭০ টাকা ও ১০০ সৌদি রিয়াল উদ্ধার করা হয়েছে। গত রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজৈর এলাকার সিরাজুল এর বাড়ির সংলগ্ন এলাকায় জুয়া চলছে।
যেখানে মোড়েলগঞ্জ, বানিয়াখালি, রায়েন্দা ও মঠবাড়িয়া থেকে আসা একটি সংঘবদ্ধ চক্র সারারাত জুয়া খেলে এমন গোপন সংবাদে শরনখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল ইসলাম শামীমের নেতৃত্বে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় জুয়ার আসর থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়।
এরা হলেন মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের জিন্নাত শেখের পুত্র জামাল শেখ(৬০), একই উপজেলার বাদুরতলা গ্রামের মনসুর আলীর পুত্র কবির হোসেন(৪৫), খোন্তাকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজৈর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের পুত্র সুমন(৩০), একই এলাকার জালাল উদ্দিন আকনের পুত্র সিরাজুল ইসলাম আকন(৬০), এছাড়া মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ভাষানদল গ্রামের অতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি ছেলে বিপুল চন্দ্র(৪৫) কে আটক করে। পরে তল্লাশি চালিয়ে নগদ টাকা ও ২ গ্রাম পরিমান গাঁজা পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামীম বঙ্গীয় প্রকাশ জুয়া আইন ১৮৬৭ এর ৪ ধারা মতে চারজনকে এক মাসের সশ্রম কারাদন্ড ও অন্য একজনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৪২ ধারা মতে তিন মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। পরে তাদের শরণখোলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে শরনখোলা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ইকরাম হোসেন বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযানে আটক পাঁচজনকে ওই মামলায় ২৫ সে্েপ্টম্বর সকালে বাগেরহাট জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খোন্তাকাটা ইউনিয়নের এক সমাজসেবক ও রায়েন্দা ইউনিয়নের এক সমাজসেবক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ জুয়ার আসর থেকে অনেকেই মাসোয়ারা নেয়ার অভিযোগ থাকায় এ ঘটনাটি পর্দার অন্তরালে রয়ে যায়। নির্বাহী কর্মকর্তার সাহসী এ ধরনের পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। যার মাধ্যমে জুয়ার আসর বন্ধ হলে এলাকা থেকে চুরি, ছিনতাই, মাদকদ্রব্য বিক্রি অনেকটাই বন্ধ হবে বলে তারা আশা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামিম বলেন, শরণখোলায় যোগদান করার পরে তিনি জানতে পারেন তার প্রশাসন এলাকা থেকে ২ কিলোমিটার দুরে জুয়ার আসর চলে। হয়ত অনেকেই এ ব্যপারে পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু অভিযোগ পাওয়ার পর গোপনে এ অভিযান পরিচালনা করে ৫ জনকে আটক করতে পারলেও ১০/১২ জন পালিয়ে যায়। ভবিষ্যতে উপজেলার অন্য কোথাও এ ধরনের অণৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।