নিজস্ব প্রতিবেদক : মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ডিএনসি’র ঢাকা মেট্রো; (উত্তর) কার্যলয়ের কর্মকর্তারা রেকর্ড পরিমান সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও বিপুল পরিমাণ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট এর বিশাল চালান উদ্ধার করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার এক ফ্ল্যাট থেকে ১ লক্ষ ২১ হাজার পিস টাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার সহ ২ জন মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এযাবতকালের টাপেন্টাডল ট্যাবলেট এর সর্ববৃহৎ চালান আটক করেছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারসহ নেশার মরণ ছোবল থেকে তরম্নন সমাজকে রক্ষার জন্য ঢাকা মহানগরীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
![](https://ajkerdesh.com/wp-content/uploads/2024/05/WhatsApp-Image-2024-05-31-at-21.07.07_c7f123fd.jpg)
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) এর উপপরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এবং সহকারী পরিচালক, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) মোঃ মেহেদী হাসান এর নেতৃত্বে গুলশান সার্কেল সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত টিম কর্তৃক গতকাল মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর, বিকাল ৩ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাজারীবাগ থানাধীন হাজী আফছার উদ্দিন রোডস্থ ৬৮/ই/৬ দখলীয় ফ্ল্যাটের ভিতর হতে ০২ জন আসামীর কাছে হতে ১ লক্ষ ২১ হাজার পিস টাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ নগদ ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে যা যাবৎ কালের টাপেন্টাডল এর সর্ববৃহৎ চালান।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের তথ্য যথাক্রমে : মোঃ তামজীদ পাটোয়ারী (২৯), পিতা- আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী, স্থায়ী সাং- থানা- কোতয়ালী,জেলা- কুমিল্লা। পেশা: ব্যবসা এবং একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হতে সদ্য স্নাতক উত্তীর্ণ এবং মবিনুর রহমান (৩০), পিতা- মোঃ গোলাম মোস্তফা, স্থায়ী সাং- থানা- জাজিরা, জেলা- শরীয়তপুর। পেশা: ব্যবসা ও সদ্য গ্যাজুয়েট।
চক্রটিকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয় : টাপেন্টাডল এর চোরাচালান ও অপব্যবহার সম্পর্কে ডিএনসি’র কাছে বেশকিছু গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। উল্লেখ্য চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪২ হাজার ২০০ পিস টাপেন্টাডল মাদকসহ ৫ জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
অপর একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অবগত হয় যে, তামজীদ পাটোয়ারী ও মবিনুর রহমান এর নেতৃত্বে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার টাপেন্টাডলের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশেস্নষণ করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এই সিন্ডিকেটের ব্যবসার কৌশল সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিশ্চিত হয় যে, একটি বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে টাপেন্টাডল ট্যাবলেট এর একটি বড় চালান সংগ্রহ করে হাজারীবাগ এলাকার একটি ফ্ল্যাটে মজুদ করেছে।এর প্রেক্ষিতে সহকারী পরিচালক, মোঃ মেহেদী হাসান এর নেতৃত্বে এবং গুলশান সার্কেলের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি চৌকশ টিম গঠন করে উল্লেখিত যায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ১ লক্ষ ২১ হাজার ট্যাপেন্টাডল (ট্যাবলেট) মাদকসহ নগদ ৮ লক্ষ ৫০ হাজার মাদক বিক্রিত টাকা জব্দ করা হয় এবং তামজীদ পাটোয়ারী ও মবিনুর রহমান’কে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।
ব্যবসার কৌশল : গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যাবসায়ীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মূলত পার্শবর্তী দেশ ভারতের তেলেঙ্গানা এবং গান্ধিনগর এলাকায় মাদকটি সংগ্রহ করা হয়। প্রশান্ত সাহা নামে একজন মাদক ব্যবসায়ী (পেশা ডাক্তার) কুমিলস্নার বিভিন্ন সীমামত্মবর্তী এলাকা দিয়ে টাপেন্টাডল মাদক দেশে নিয়ে আসেন এবং বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় তামজীদ পাটোয়ারী ও মবিনুর রহমানের কাছে পাঠায়। এসংক্রান্তে মাদক কর্মকর্তারা একাধিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।
তামজীদ পাটোয়ারী ও মবিনুর রহমান প্রাপ্ত টাপেন্টাডল সংগ্রহ করে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় মজুদ করে। প্রাথমিকভাবে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানতে পারে যে, রাজধানীসহ, মাদারীপুর ও বেশ কয়েকটি জেলা শহরে একাধিক ক্রেতা রয়েছে। উলেস্নখ্য, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারী এড়ানো জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করত। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে যা যাচাই-বাছাই পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরম্নদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ডিএনসি’র অভিযান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আজকের দেশ ডটকম কে জানান, জাতীয় ও জনস্বার্থে মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত মাদকের বিরম্নদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বদ্ধপরিকর।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) কর্তৃক ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।