অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে অনীহা ও ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের সম্ভাবনায় সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের উদ্বেগ

Uncategorized কর্পোরেট সংবাদ জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি রাজশাহী সংগঠন সংবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে অনীহা ও ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের সম্ভাবনায় সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, সম্প্রাতি অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্যা হিন্দুর’ সাক্ষাৎকারে বলেছেন গণহত্যাকারি ও ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিতে তাদের কোন অসুবিধা নাই।


বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ গত ষোল বছরে দেশে একনায়কতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী সরকার কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।বিরোধী দল ও মতের উপর সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদী কায়দায় জুলুম নির্যাতন করে, গুম-খুন ও লুটপাটের রাজনীতি কায়েম করেছিল।


বিজ্ঞাপন

জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে স্বাধীন বাংলাদেশে দুই হাজারের এর কাছাকাছি সংখ্যক নাগরিক হত্যা করে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করা এই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে তুলনা করা ও এদের অপ-রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে দেয়ার যে বার্তা তা আমাদের উদ্বিগ্ন ও বিচলিত করেছে।

যে সকল রাজনৈতিক দল ও শক্তি দেশে ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের এই চিন্তা ও প্রচেষ্টাকে আমরা সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

আমাদের মনে আছে যে বেশ কিছুদিন আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ফেইসবুকে পোষ্টে বর্তমান আওয়ামী লীগকে একটি ফ্যাসিষ্ট রাজনৈতিক দল ঘোষনা করে তাকে দেশে কোন প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড করতে না দেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষনা করেন। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, এই স্বল্প সময়ের মধ্যে কি পরিবর্তন হলো যে এই ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে। আমরা আবারও মনে করে দিতে চাই যে এই সরকারের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের উপরে ভিত্তি করেই গঠিত হয়েছে।

সুতরাং গণগত্যা সংগঠনকারী এই ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও এর বিচার এই সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।
একই সাথে বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছে যে কোন কোন রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচনকেই প্রাধান্য দিচ্ছে এবং একই সাথে বিদ্যমান ভঙ্গুর ও দুর্নীতিতে জরাজীর্ণ কাঠামো সংস্কারে অনীহা প্রকাশ করছে।

শুধু রাজনৈতিক দল-ই নয়, প্রশাসন তথা ফ্যাসিবাদী আমলাতন্ত্রের দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও এক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটবিরোধী এই সংকীর্ণ রাজনৈতিক চিন্তা আমাদের মারত্মকভাবে শংকিত করে। অধিকন্তু, যেসব ছাত্রনেতা এই অভ্যুথানে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং বর্তমানে রাষ্ট্র সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও বিষোদগার করা হচ্ছে।

অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বিরোধী এসব পরিকল্পিত ও সঙ্ঘবদ্ধ ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সিআই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে দেশের জনগণ জুলাইয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে যেভাবে নিজেদের সঁপে দিয়েছিলো একইভাবে এখনো এই সরকারের পাশে আছে।

দেশ-বিদেশে পতিত স্বৈরাচারের অপপ্রচার, গত ষোল বছরের ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রযন্ত্র সংস্কারে ধীরগতি, কোন কোন রাজনৈতিক দলের অসহযোগীতা এবং ফ্যাসিবাদী আমলাতান্ত্রিক নানা ষড়যন্ত্র স্বত্বেও এই সরকার দৃশ্যমান অনেকগুলো পরিবর্তন সাধন করেছে এবং পরিবর্তন প্রচেষ্টা চলমান রেখেছে যা দেশের মানুষের মনে সত্যিই আশার সঞ্চার করছে।

ইতোমধ্যে এই সরকার তার শততম দিনের বিবৃতিতে প্রমাণ করেছে সরকার জনগণের দাবীদাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া, যথাযথ রাষ্ট্র সংস্কার নিশ্চিত করা ও জুলাই অভ্যুত্থানের খুনিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানাচ্ছে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ।

আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করছি যে গত ১৫ বছরের সর্বগ্রাসী ফ্যাসিবাদ ও ৭৭ বছরে জাতির ভাগ্য উন্নয়নে ব্যর্থ হওয়া দুটি রাষ্ট্রযন্ত্রের করুণ পরিণতি ও অভ্যুত্থানের আকাংক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি সম্ভাবনাময়, গনতান্ত্রিক ও মানুষের অধিকারভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মানে দেশের সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনসহ ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ অতি দ্রুত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষনা করে আওয়ামী লীগ ও সামগ্রিকভাবে এর নের্তৃত্বের সকল অপরাধের বিচার সুনিশ্চিত করার উদ্বাত্ত আহবান জানাচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *