এম জাবেদ হোসাইন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) : “এসো স্মৃতির অঙ্গনে মিলি প্রীতির বন্ধনে” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে গতকাল শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সরকারহাট এন.আর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী দিনব্যাপি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বর্ণাঢ্য র্যালি দিয়ে শুরু হয় দিন ব্যাপি কর্মসূচি। র্যালিটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শেষ হওয়ার পর দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হয়।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে পূর্ণমিলনীয় উৎসবের ২য় অধিবেশনের শুরু হয়। অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহবায়ক প্রিয়তোষ নাথের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরিয়াল ফেলো ও সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর এ. জে. এম. শহীদুল্লাহ, ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজার প্রফেসর শামস উদ দোহা। অনুষ্ঠানে স্কুল প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান, স্বীকৃতিস্বরুপ মরণোত্তর সম্মাননা, মেধা তালিকা ও গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়।
প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও বিশিষ্টজনদের স্মৃতিচারণ, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ ও বক্তব্য, উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষকবৃন্দের সম্মাননা।
মোহাম্মদ শওকত ইকবালের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ করেন এডিশনাল আইজিপি ড. মেজবাহ উন নবী, প্রফেসর ডা. কাজী আব্দুল মান্নান, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান, ছড়াকার আহমেদ জসিম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব পুলক কান্তি বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি ডিপার্টমেন্টের এসোসিয়েট প্রফেসর তাপস কুমার ভৌমিক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ চৌধুরী, লায়লা আরজুমান বানু, শহীদুল ইসলাম রুবেল।
সারাদিন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ছিল নবীন প্রবীণদের মিলনমেলা, ফটো সেশন গল্প আড্ডা স্মৃতিচারণ। এবং সন্ধ্যার বিশেষ আকর্ষণ ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী কোনাল ও সাব্বির এর মনমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
৬৮ ব্যাচের কৈলাশপতি কর্মকার বলেন, ‘নিজের ৮৪ বছর বয়সে আজ আমার বিদ্যাপিঠে এসে আমি সেই শৈশব কৈশোর ফিরে গেলাম। যদিও আমার ব্যাচের সবাই আসতে পারেনি। ৮ থেকে ১০ জন বন্ধু এসেছে। তাদের সঙ্গে কৈশোরে কাটানো স্মৃতিগুলো আজ আবারও মানসপটে ভেসে উঠলো। জীবনের জন্য এমন মিলনমেলা খুবই প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই স্কুলে শুধু তিনিই নন, তার ছেলে, মেয়ে এবং নাতি নাতনিও পড়েছেন।’
২০১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. নিশান বলেন, ‘এই পুনর্মিলনীতে না আসলে অনেককিছু অজানা থেকে যেতো। এই স্কুলে যে এতো কৃতি সন্তান আছেন। যাদের অধিকাংশই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এখানে পড়াশোনা করে।’
পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, মিরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নজর আলী রূপজান উচ্চ বিদ্যালয়। যে বিদ্যাপীঠে সৃষ্টি হয়েছে হাজারো মেধাবী ছাত্রছাত্রী। যারা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন। এভাবে দীর্ঘ ৮৬ বছর ধরে জ্ঞান বিতরণ করা হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা প্রাণের মিলন মেলায় মিলিত হয়েছেন। এই মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করেছে স্কুলের ৫৭ ব্যাচের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।