# সাবেক আওয়ালীগ ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে তিনি ই/এম ৮নং ডিভিশনে পরবর্তীতে ই/এম ৯নং ডিভিশনের অধীনে নারায়ণগঞ্জ ডিভিশনে দীর্ঘদিন দায়িত্বে ছিলেন ইচরে পাকা এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী। স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর সেকশনে কোন ঠিকাদার কাজ পেলে বলে থাকেন আমার কিছু দরকার নেই আপনি ভালো করে কাজ করেন। এ রকম সুন্দর কথায় বিশ্বাস করে কেউ কাজ শুরু করলে সিডিউল মোতাবেক সকল মালামাল তো কিনতেই হবে এরপরেও অতিরিক্ত মালামাল কিনিয়ে তিনি নিজেই অন্য সাইটে ওই সকল মালামাল ব্যবহার করে অন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা আদায় করে থাকেন। জনৈক ‘আকবর’ নামক এক ঠিকাদার বলেন, তার একটি ছোট কাজে ২১টি ফায়ার এক্সটিনগুইসার ধরা থাকলে তাকে দিয়ে ২১টিই কিনিয়ে ওই ঠিকাদারের কাজে ১২টি ব্যবহার করে বাকী ৯টি নারায়ণগঞ্জ মেডিকেলে অন্য ঠিকাদারের কাজে ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকা আদয় করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিল্টন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই মিল্টন ‘ন’ আদ্যাক্ষরের এক ঠিকাদারও জনৈক মজুমদারসহ ৪ জন ঠিকাদারকে নিয়ে তার সেকশনের প্রায় সকল কাজ ভাগ-বাটোয়ারা করে মোটা অংকের পার্সেন্টেজ বাণিজ্য করেন। সহকর্মীদের কাছে গর্ব ভরে বলে থাকেন ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে ওই সেকশনে পোষ্টিং নিয়েং এসেছেন তিনি। সে টাকা উঠাতে তার ৩/৪ মাস সময় লাগবে। চাঁপাবাজ ধুরন্ধর এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী অবৈধ অর্থের জোরে মদ ও নারীবাজিতে ব্যস্ত থাকেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার দু’জন সহকর্মী জানিয়েছেন। মাত্র ১১ বছরের চাকরি জীবনে অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থে গ্রামের বাড়ি পাবনায় অনেক ভূ-সম্পদ মার্কেটসহ ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী । এছাড়াও পিএসসি’র প্রিটিং প্রেস, ১১২ ফ্ল্যাট প্রকল্প, এনএমএসটি, তালতলা ও আগারগাও সরকারি কলোনী, আবহাওয়া অধিদপ্তর, বিডা, পাসপোট, সমাজসেবা ও বন আধিদপ্তর, এনআইএমএইচ, এনআইসিভিডি, এনআইকেডিইউ, টিবি হাসপাতাল, নিটোর, শিশু হাসপাতাল, এনবিআর, বিটিআরসি, বিআইসিসি, এসএমআরসি, স্পারসো, ডিটিই ভবন, ইপিবি ভবন, মানিকমিয়া এভিনিউস্থ ৬টি ন্যাম ভবনে (আমব্রেলা প্রজেক্টের অধীনে বিশেষ মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ কাজ হয়েছে), বিআইএম ভবন, আগারগাঁও নিউ কলোনী, এনজিও ব্যুরো ভবন, জাতীয় বাতজ্বর ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, ৪৪৮ ফ্ল্যাট, এনআইএলজিসহ বিভিন্ন স্থাপনার লিফট ও এসিগুলোর বার্ষিক মেরামত এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক/যান্ত্রিক মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ ও নবায়ন পুনর্বাসন কাজগুলোতে নামকাওয়াস্তে কাজ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট অধীনস্থ প্রকৌশলীদের সহয়তায় প্রতিবছর বড় অংকের টাকা লুটপাট করে ভাগ বাটোয়ারা করা হচ্ছে #


নিজস্ব প্রতিবেদক : গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইউসুফ। অত্যন্ত ক্ষমতাধর কর্মকর্তা ইউসুফের বিরুদ্ধে রয়েছে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি,কমিশন,বাণিজ্য ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাজ ভাগাভাগি করে অর্থ লোপাটের অভিযোগ। তিনি অফিসে বসেন না। তার অফিসের কর্মচারীদের একটাই কথা স্যারকে তো আমরাই অফিসে পাই না আপনারা কিভাবে তার দেখা পাবেন।
মোঃ ইউসুফের রয়েছে একটি শক্তিশালী সরকার বিরোধী ঠিকাদার সিন্ডিকেট। মূলত, সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ইউসুফ মনেপ্রাণে বর্তমান সরকারকে ঘৃণা করেন। আওয়ামী বিরোধী লোক দেখলেই তার গা জ্বলে। পক্ষান্তরে নিজেকে জামাত ঘরানার প্রমাণে ভুয়া একটি প্যাডে চট্টগ্রাম বিআইটির বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যাড দিয়ে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দিয়েছেন ।

সভাপতি চট্টগ্রাম বিআইটি’র ভুয়া পরিচয় দিয়ে চাপা বাজি : উক্ত প্যাড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাইফুল্লাহ নামে কোন সভাপতি চট্টগ্রাম বিআইটিতে ছিল না। আবার স্বাক্ষরের নিচে যে সিল দেয়া হয়েছে সেটিও ভুয়া । সেখানে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্র শিবির। কিন্তু বাংলাদেশ ছাত্র শিবির নামে কোন সংগঠন নেই। সংগঠনটির প্রকৃত নাম হলো- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির। এভাবে জাল জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া ইউসুফ এখন শিবির সাজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরে বিএনপি জামাত বিরোধী প্রকৌশলীদের নিয়ে যে সিন্ডিকেট ইউসুফ তার মধ্যে অন্যতম বলে জানা গেছে। নির্দিষ্ট কমিশন ছাড়া তিনি কোন কাজ করেন না। আমাদের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে তার থলের বিড়াল।

গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেন তিনি : গণমাধ্যমকে তিনি এড়িয়ে চলেন। তিনি যেহেতু কমিশন ছাড়া কাজ করেন না তাই নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখেন এমন অভিযোগ একাধিক ভুক্তভোগীর। শুধু তাই নয়, ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে একজন ঠিকাদার পাওনা আদায়ে থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দাখিল করেছিল যা গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে উঠে এসেছিল। তারপর তড়িঘড়ি করে উক্ত ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করেছিলেন বলে জানা গেছে। গত অর্থ বছরের শেষের দিকে তিনি তার ১৫-২০% কমিশনের টাকা আদায়ের জন্য উঠে পড়ে লাগেন। কাজ না করে ও পুরো বিল উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ও আছে ইউসুফের বিরুদ্ধে।কাজ না করে বিল উত্তোলনের এ টাকা তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের সাথে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে তা গণমাধ্যমের সংবাদে উঠে আসার পরেও তার বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ নিয়ে অধিদপ্তর জুড়ে রয়েছে গুঞ্জন। কিসের ক্ষমতায় এবং কার অনুকুল্যে তিনি এতটা ক্ষমতাধর? এ প্রশ্নের জবাব খুুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে পিলে চমকানো তথ্য। ইএম কারখানা বিভাগ একটি অত্যন্ত লোভনীয় পোষ্টিং। এখানে নয় ছয়ের সুয়োগ খুব বেশী। তাই উক্ত স্থানটিতে আসার জন্য তিনি অনেক টাকা বিনিয়োগ ও করেছেন।
একাধিক সূত্রের দাবি : একাধিক সূত্র তা নিশ্চিত করেছে। মোঃ ইউসুফ অফিসের বাইরে বসে তার কমিশন বাণিজ্য চালিয়ে যেতে খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি অত্যন্ত বড়। আওয়ামী ঘরনার এই কর্মকর্তা সরকারী অর্থ হাতিয়ে নিতে সিদ্ধহস্ত। তিনি মূলতঃ তার সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকেন। তার আস্থাভাজন বিহারী কাওসার, নাজমা এন্টারপ্রাইজের সাথে যে সখ্যতার প্রমাণ মিলেছে। সরকার বিরোধী ঠিকাদাররা তার অত্যন্ত আস্থাভাজন। তার কমিশন বাণিজ্যের রেট ১৫-২০%। এমন তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে।
ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদারদের বক্তব্য : ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদারগণ নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমের কাছে এ কথা বলেন। আগারগাঁও এ সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পে একজন ঠিকাদারের নিকট থেকে বাধ্যতামূলকভাবে বিল আটকিয়ে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করেছেন। উক্ত ঠিকাদার এখন ও পুরাপুরি বিল তুলতে পারেনি। আমাদের অনুসন্ধানে তা বেরিয়ে এসেছে। অথচ ২ বছর পূর্বে উক্ত প্রকল্প সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোঃ ইউসুফ বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের অত্যন্ত আস্থাভাজন।
সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন। একটি নিদিষ্ট সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য মোঃ ইউসুফ। গণপূর্ত অধিদপ্তরে এতটাই ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছেন যে, তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করেছেন। এছাড়াও ইএম ও সিভিল শাখার একাধিক নির্বাহী প্রকৌশলী কমিশন বাণিজ্যের হোতা। এরা অবৈধ অর্থ ও সম্পদ এতটাই বেশী অর্জন করেছেন যে, কোন আইন ও নীতিমালা এদের স্পর্শ করতে পারে না।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে পর্যন্ত কেয়ার করেন না : এরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে পর্যন্ত কেয়ার করেন না। এদের একটাই কথা, টাকা থাকলে সব ম্যানেজ করা যায়। নামে-বেনামি ইউসুফ ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা সম্পদ ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে। সিন্ডিকেট সমস্ত নিয়োগ, বদলি, পদায়ন এ নেপথ্য ভূমিকা রাখেন। অতি সম্প্রতি সিন্ডিকেটের এক সদস্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন হয়েছে। যেখানে তার পদায়ন হওয়ার যোগ্যতাই নেই। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে ইতোমধ্যে এদের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কাছের সিন্ডিকেটই আবার ও একই পথে হাঁটছে : শতশত কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে এরা সাপ লুডু খেলছে। কমিশনের বিনিময় সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের কাজ দিতে তৎপর। উপদেষ্টা ও সচিব এখনই কঠোর না হলে সাধারণ ঠিকাদারগণকে বঞ্চিত হতে হবে। এই সিন্ডিকেটের একটা বড় গুণ তা হলো যখন যে মন্ত্রী, সচিব কিংবা প্রধান প্রকৌশলী দায়িত্বে আসেন তখনই তাদের আস্থাভাজন হতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা একজন অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি। তার নামও এরা ভাঙ্গিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমন কি তার নিকট আত্মীয়দের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে এই সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী সদস্যরা মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত গিয়েছেন এমন তথ্য ও পাওয়া গেছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী ইউসুফের দুর্নীতিচিত্র : নিলামের মাধ্যমে গত ৯ আগষ্ট শনিবার ট্রান্সফরমার ৩টি গণপূর্ত কারখানা উপবিভাগ-২ এর কম্পাউন্ড থেকে ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যায় কথিত ‘দায়েন’ নামক ঠিকানার একটি প্রতিষ্ঠান। মাত্র ১৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেখিয়ে উপ-সহকারী উপবিভাগীয় ও নির্বাহী প্রকৌশলী ৮ লক্ষ টাকা নগদ কমিশন পেয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তাদের জন্য ১১২ ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পে ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার চুক্তিমূল্যে পাম্প মটর সেট সরবরাহ স্থাপণ টেষ্টিং কমিশনিং ও ৭৯১৯৯৩১ টাকা চুক্তিমূল্যে সিসিটিভি সিস্টেম সরবরাহ ও স্থাপণ কাজ দুটিতে জুন ক্লোজিংয়ে পুরো বিল দেওয়া হয়েছে অথচ কাজের কিছুই হয়নি। ভবন নির্মাণ কাজ এখনও চলমান।
একই অর্থবছরে বিশেষ বরাদ্দে ২১,৬১,২৫০ টাকার চুক্তিমূল্যে স্থানীয় সরকার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ডাইনিং হলের বিভিন্ন ধরণের লাইট ফিটিংস মেরামত নবায়নসহ সিকিউরিটি ও গার্ডেন লাইটের সংরক্ষণ ও পুনর্বাসনের নামে নামকাওয়াস্তে কাজের বাস্তাবায়ন দেখিয়ে পুরো বরাদ্দ ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে। ২২,৬০,০০০ চুক্তিমূল্যে একই অর্থবছরে জাতীয় আর্কাইত ও লাইব্রেরী ভবনের মিটিং রুমে এলইডি টিভি ল্যাব রুমে ইন্টারএক্টিভ ডিসপ্লে ২টি ওয়াকিটকি ৩টি অডিও রেকর্ডার ২টি পয়েন্টার সরবরাহ স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় ওয়্যারিং কাজে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহ দেখিয়ে বরাদ্দে প্রায় অর্ধাংশ লোপাট করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ৫৪,১০,৯৭৮ টাকার চুক্তিমূল্যে আবহাওয়া অধিদপ্তরে লাইব্রেরী ও ট্রেনিং রুমে ফায়ার হাইড্রেন্ট রিপেয়ারিং ফায়ার এক্সটিনগুইসার রিফিলিং এইচটি সুইচ গিয়ার মেইনগেট সিকিউরিটি লাইটসহ অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এবং নতুন এসি সরবরাহ স্থাপণ সহকারে পুরাতন এসির বার্ষিক মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যাপক জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী মিল্টন কুমার দাসের সহায়তায় বরাদ্দের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরে চাকরিতে ঢুকে এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসাসহ ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে এই মিল্টন কুমার দাস এখন কোটিপতি।
সাবেক আওয়ালীগ ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে তিনি ই/এম ৮নং ডিভিশনে পরবর্তীতে ই/এম ৯নং ডিভিশনের অধীনে নারায়ণগঞ্জ ডিভিশনে দীর্ঘদিন দায়িত্বে ছিলেন ইচরে পাকা এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী। স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর সেকশনে কোন ঠিকাদার কাজ পেলে বলে থাকেন আমার কিছু দরকার নেই আপনি ভালো করে কাজ করেন। এ রকম সুন্দর কথায় বিশ্বাস করে কেউ কাজ শুরু করলে সিডিউল মোতাবেক সকল মালামাল তো কিনতেই হবে এরপরেও অতিরিক্ত মালামাল কিনিয়ে তিনি নিজেই অন্য সাইটে ওই সকল মালামাল ব্যবহার করে অন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা আদায় করে থাকেন। জনৈক ‘আকবর’ নামক এক ঠিকাদার বলেন, তার একটি ছোট কাজে ২১টি ফায়ার এক্সটিনগুইসার ধরা থাকলে তাকে দিয়ে ২১টিই কিনিয়ে ওই ঠিকাদারের কাজে ১২টি ব্যবহার করে বাকী ৯টি নারায়ণগঞ্জ মেডিকেলে অন্য ঠিকাদারের কাজে ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকা আদয় করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিল্টন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই মিল্টন ‘ন’ আদ্যাক্ষরের এক ঠিকাদারও জনৈক মজুমদারসহ ৪ জন ঠিকাদারকে নিয়ে তার সেকশনের প্রায় সকল কাজ ভাগ-বাটোয়ারা করে মোটা অংকের পার্সেন্টেজ বাণিজ্য করেন। সহকর্মীদের কাছে গর্ব ভরে বলে থাকেন ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে ওই সেকশনে পোষ্টিং নিয়েং এসেছেন তিনি। সে টাকা উঠাতে তার ৩/৪ মাস সময় লাগবে। চাঁপাবাজ ধুরন্ধর এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী অবৈধ অর্থের জোরে মদ ও নারীবাজিতে ব্যস্ত থাকেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার দু’জন সহকর্মী জানিয়েছেন।
মাত্র ১১ বছরের চাকরি জীবনে অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থে গ্রামের বাড়ি পাবনায় অনেক ভূ-সম্পদ মার্কেটসহ ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী । এছাড়াও পিএসসি’র প্রিটিং প্রেস, ১১২ ফ্ল্যাট প্রকল্প, এনএমএসটি, তালতলা ও আগারগাও সরকারি কলোনী, আবহাওয়া অধিদপ্তর, বিডা, পাসপোট, সমাজসেবা ও বন আধিদপ্তর, এনআইএমএইচ, এনআইসিভিডি, এনআইকেডিইউ, টিবি হাসপাতাল, নিটোর, শিশু হাসপাতাল, এনবিআর, বিটিআরসি, বিআইসিসি, এসএমআরসি, স্পারসো, ডিটিই ভবন, ইপিবি ভবন, মানিকমিয়া এভিনিউস্থ ৬টি ন্যাম ভবনে (আমব্রেলা প্রজেক্টের অধীনে বিশেষ মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ কাজ হয়েছে), বিআইএম ভবন, আগারগাঁও নিউ কলোনী, এনজিও ব্যুরো ভবন, জাতীয় বাতজ্বর ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, ৪৪৮ ফ্ল্যাট, এনআইএলজিসহ বিভিন্ন স্থাপনার লিফট ও এসিগুলোর বার্ষিক মেরামত এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক/যান্ত্রিক মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ ও নবায়ন পুনর্বাসন কাজগুলোতে নামকাওয়াস্তে কাজ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট অধীনস্থ প্রকৌশলীদের সহয়তায় প্রতিবছর বড় অংকের টাকা লুটপাট করে ভাগ বাটোয়ারা করা হচ্ছে।
এ সব বিষয়ে কথা বলার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইউসুফের মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল দিয়েও সাড়া না পেয়ে তার অফিসে গিয়েও তাকে না পাওয়ায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের সুনাম ও মর্যাদা রক্ষায় উপরোক্ত দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে সচেতনমহল প্রধান প্রকৌশলীসহ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।