বিদেশি প্রায় ২৪টি এয়ারলাইন্সর কাছে বকেয়া ৪৬ লাখ ডলার

অর্থনীতি

ফ্লাইট চালানোর অনুমতি পেতে লাগবে
৫০ হাজার ইউএস ডলার জামানত

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদেশি এয়ারলাইন্সের নিকট বেবিচকের পাওনা, বকেয়া রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে নতুন কোন বিদেশি এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ ফ্লাইট পরিচালনা শুরুর আগ্রহ প্রকাশ করলে, ফ্লাইট চূড়ান্ত অনুমোদনের পূর্বে জামানত নিতে হবে। বেবিচকের পরিচালনা পর্ষদের ২৬৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নতুন কোনও বিদেশি এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের যে কোনও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনার পূর্বে জামানত দিতে হবে। তবে একটি বিমানবন্দরে জামানত দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করার পর অন্য বিমানবন্দরে ফ্লাইট শুরু করতে আবার জামানত দিতে হবে না। জামানত দিতে হবে ৫০ হাজার ইউএস ডলার।
জামানত রাখা হলে আর কোনও এয়ারলাইন্সের কাছে বকেয়া থাকবে না বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান। তিনি বলেন, জামানত রাখার মূল উদ্দেশ্যে চার্জ, রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করা। কোনও এয়ারলাইন্স চাইলে অপারেশন বন্ধ করলে, জামানত ফেরতও নিতে পারবে।
হুট করেই বাংলাদেশে চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় বিদেশি প্রায় ২৪টি এয়ারলাইন্সর কাছে থেকে বকেয়া আদায় করতে পারেনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। দীর্ঘ সময় ধরে তৎপরতা চালিয়েও আদায় করা সম্ভব হয়নি প্রায় ৪৬ লাখ ডলারের বেশি বকেয়া। তবে এবার বকেয়া বন্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বেবিচক। ৫০ হাজার ইউএস ডলার জামানত দিলেই মিলবে ফ্লাইট চালানোর অনুমতি। বকেয়া শোধ না করলে এই জামানতের টাকা থেকে কেটে রাখবে বেবিচক।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে কমপক্ষে ৬টি এয়ারলাইন্স নতুন করে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে চায়। এরমধ্যে ইরান এয়ার, ইরাকি এয়ারওয়েজ, গারুদা ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়ান এয়ার ফ্লাইট চালানোর অনুমতি চেয়ে বেবিচকের কাছে আবেদন করেছে। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ আছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সও পুনরায় ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত।
৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল পুনরায় চালু করা এবং দুই দেশের সিভিল এভিয়েশনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
বেবিচকের অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অনেক এয়ারলাইন্সই বাংলাদেশ আসতে চায়। অনেকে আসে, পরবর্তীতে তারা বেবিচকের বকেয়া পরিশোধ না করেই অপারেশন বন্ধ করে চলে যায়। এসব আর্থিক ক্ষতি রোধ করতে বেবিচকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় জামানত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি কার্যকর হলে কোনও এয়ারলাইন্সে বকেয়া রেখে অপারেশন বন্ধ করলেও জামানত থেকে সমন্বয় করা সম্ভব হবে।
বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, জামানতের টাকা তফসিল ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা হবে। কোনও এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করলে জামানতের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বকেয়া থাকলে তা সমন্বয় করে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হবে। ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে বেবিচকের কাছে পে অর্ডারের মাধ্যমে জামানত জমা দিতে হবে। জামানত না দিলে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি বাতিল হবে।


বিজ্ঞাপন