নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে আলোচিত লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হত্যা মামলায় আরও এক আসামি গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রাপলিটন পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ রিজওয়ান উদ্দিন অভি (৩১)। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই ২০২৫ খ্রি.) রাত আনুমানিক ১১ টা ৫৫ মিনিটের সময় পটুয়াখালী জেলায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ বুধবার (১৬ জুলাই ২০২৫ খ্রি.) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী, এনডিসি।

ডিএমপি কমিশনার জানান, গত ৯ জুলাই, বিকেল আনুমানিক ৫ টা ৪০ মিনিটের সময় রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) কে প্রকাশ্য দিবালোকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ও উপর্যুপরি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়। ৯৯৯ এর মাধ্যমে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে তা চকবাজার পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করেন। চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় ‘চাঁদাবাজদের জায়গা নাই, ব্যবসায়ীদের ভয় নাই’ এরকম স্লোগান দিয়ে অভিযুক্তরা একটা মবের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।

ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিক সন্দিগ্ধ মাহমুদুল হাসান মহিন এবং ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে রবিন নামে অপর একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরও সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য তা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
ডিএমপি কমিশনার আরও জানান, মামলাটি তদন্তকালে প্রাথমিকভাবে ভিকটিম সোহাগকে উপর্যুপরি পাথর নিক্ষেপ করা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গেলেও সেই সময় তার পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের বিশেষ টিমের সহায়তায় তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তার অবস্থান চিহ্নিত করে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে (১৫ জুলাই ২০২৫ খ্রি.) মোঃ রিজওয়ান উদ্দিন অভিকে পটুয়াখালী জেলা হতে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার এজাহার নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতোমধ্যে এজাহারের একটি কপি ছড়িয়ে পড়ে যেটি মূলত মামলার চূড়ান্ত এজাহার দায়েরের পূর্বে ভিকটিমের সাবেক স্ত্রী ও তার সৎভাই কর্তৃক প্রস্তুতকৃত এজাহারের খসড়া যাতে ২৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিলো। পরবর্তীতে মামলার বর্তমান বাদিনী ভিকটিমের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম থানায় এসে মামলা রুজু করার সময় বাদিনীর মেয়ে উক্ত খসড়া এজাহারের ছবি তুলে রাখে।
ভিকটিমের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম উক্ত খসড়া এজাহার থেকে পাঁচজনের নাম বাদ দিয়ে নতুন একজনের নাম সংযোজন করে মোট ১৯ জনেকে আসামি করে চূড়ান্ত এজাহার দায়ের করেন এবং এর ভিত্তিতে উক্ত ঘটনায় কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
এই ঘটনায় ভিকটিমকে পাথর নিক্ষেপকারী একজনসহ এ পর্যন্ত মোট নয়জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এই হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য ধৃত আসামীদের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।