নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ পিবিআই পিরোজপুর কর্তৃক বিকাশ প্রতারক চক্রের মূল হোতা কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে , এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর সদর থানার মামলা নং-২৪ তারিখঃ ২৭/১০/২০২০ ধারা- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৩(১)/২৪(১)/৩৫(১) এর এজাহার ভুক্ত ৫নং আসামী নাজমুল @ ফরহাদ শেখ (২৭) এবং তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মিলন মন্ডল (২৮) দের গত ৩১ মার্চ রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি থানাধীন নারুয়া মধ্যপাড়া থেকে গ্রেফতার করলো পিবিআই, পিরোজপুর জেলা।
পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর সদর থানাধীন খামকাটা গ্রামস্থ মোঃ সেলিম মাতুব্বর এর ছেলে মোঃ এনামুল হক পিরোজপুর পৌরসভাধীন সার্জিকেয়ার সংলগ্ন মের্সাস হক ট্রেডার্স, ফ্লেক্সি ও বিকাশের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
প্রতিদিনের মতো গত ২৫/১০/২০২০ দোকান চলাকালীন সময় আসামী এইচ এম জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) (২৮) এনামুলের দোকানে এসে বেলা সাড়ে ১১ টার সময় মোবাইল -০১৭১২৭৫৮৩০৭ নম্বরে ৩১০ টাকা তার (এনামুলের) এজেন্ট নম্বর ০১৭৫৭০৭০৬০৩ দিয়া ক্যাশ ইন করে এবং কথার ছলে কৌশলে আসামী এইচ এম জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) তার ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড মোবাইল দ্বারা উক্ত দোকানের বিকাশ রেজিস্টার বইয়ের ছবি তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু বিষয়টি বিকাশের দোকানদার এনামুল হক বুজতে পারেন নাই।
পরবর্তীতে কিছুক্ষন পরে অনেকেই বিকাশ দোকানদার এনামুল হকের নাম্বারে ফোন দিয়ে বলে সে নাকি তাদেরকে ফোন দিয়ে তাদের নাম্বাদের ভুলক্রমে টাকা গেছে এমন দাবি করেছে। তখন বিকাশ দোকানদার এনামুল হক বুঝতে পারে বিকাশ প্রতারক চক্র এমনটা করেছে।
উল্লেখিত মামলার ঘটনার দিন গত ২৬/১০/২০২০ সকাল ১ টা ৫০ মিনিটের সময় আসামী জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) পুনঃরায় বিকাশ দোকানদার এনামুল হকের দোকানে আসে এবং নানা রকম কথার ছলে তার বিকাশ রেজিস্টার বই থেকে ছবি তোলার সময় বিকাশ দোকানদার এনামুল হক তাকে দেখে ফেলে।
সংঙ্গে সংঙ্গে তিনি আসামীর হাতে থাকা মোবাইল ফোন দেখতে চাইলে আসামী দ্রুত তার মোবাইল থেকে ছবি ডিলিট করে দেয়। তখন তিনি আশেপাশের লোকজনকে ডাক দিলে আসামী জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) পালানোর চেষ্টাকালে উপস্থিত লোকজন তাকে ধরে ফেলে।
উক্ত ঘটনায় বিকাশ দোকানদার এনামুল হক আসামী জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) সহ তার দেওয়া তথ্য মতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অপর ৫ ব্যক্তিকে আসামী করে পিরোজপুর সদর থানার মামলা নং- ২৪ তারিখ ২৭/১০/২০২০, ধারা- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮ এর ২৩(১)/২৪(১)/৩৫(১) মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ গ্রেফতার কৃত আসামী জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) এর কাছ থেকে তার ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন জব্দ করেন এবং বিধি মোতাবেক উক্ত আসামীকে আদালতে সোপর্দ করে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আদালতে আবেদন পূর্বক আদালতের আদেশে উক্ত আসামীকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারপর পিবিআই, পিরোজপুর জেলা স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন।
পুলিশ সুপার, পিবিআই, পিরোজপুর জেলা এর হাওলা মতে পিবিআই, পিরোজপুর জেলায় কর্মরত পুলিশ পুরিদর্শক মোঃ বায়েজীদ আকন মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন এবং তদন্তের জন্য তৎপর হন।
তিনি মামলাটি তদন্তকালে জানতে পারে যে, গ্রেফতারকৃত আসামী জুবায়ের মাহামুদ (রুবেল) তার সহযোগী হিসেবে সে সকল ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছে তা মুলত ছদ্ম নাম এবং প্রতিটি নামের পাশে বর্ণিত মোবাইল নম্বর সমূহের রেজিষ্ট্রেশন ভূয়া।
তারপর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পুরিদর্শক মোঃ বায়েজীদ আকন তথ্য-প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের সঠিক নাম-ঠিকানা উদঘাটন করতে সক্ষম হন এবং মামলার ঘটনার সহিত জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টায় তৎপর হন।
এক পর্যায়ে আ্যাডিশনাল আইজি পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও পিবিআই পিরোজপুর জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় উপরোক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ বায়েজীদ আকন মামলার ঘটনার সাথে জড়িত এজাহার নামীয় ৫নং আসামী নাজমুল @ ফরহাদ শেখ (প্রকৃত নাম) (২৭) পিতা- মোঃ ফকরুদ্দিন শেখ, সাং- তেতুলিয়া (০৪নং ওয়ার্ড), এবং তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মিলন মন্ডল (২৮) পিতা মোতালেব মন্ডল, সাং- নারুয়া (মধ্যপাড়া), উভয় থানা-বালিয়াকান্দি, জেলা- রাজবাড়িদের গত বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি থানাধীন নারুয়া মধ্যপাড়া থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার কালে তাদের নিকট থেকে প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত ০৫ টি মোবাইল এবং বিভিন্ন কোম্পানীর আরো ১৮ টি সীম উদ্ধারপূর্বক বিধি মোতাবেক জব্দ করেন। অতঃপর বিধি মোতাবেক আসামীদ্বয়কে আদালতে সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে পিবিআই, পিরোজপুর জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম পিপিএম জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর পিবিআই দীর্ঘ সময় অনুসন্ধান করে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সঠিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত বিকাশ প্রতারক চক্রের মূল হোতা এজাহার ৫নং আসামী নাজমুল @ ফরহাদ শেখ এবং তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মিলন মন্ডলদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর বিধি মোতাবেক তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।