ফেসবুকে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারকচক্র সক্রিয়

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ পিবিআই এসআইএন্ডও (অর্গানাইজড ক্রাইম-সাউথ), বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা গত ২৫ এপ্রিল ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে, মামলার এজাহারে উল্লেখিত Tabiha Sari House অনলাইন শপিং সার্ভিস ও অনলাইন ভিত্তিক ফেইজবুক পেইজ এবং মোবাইল নং-০১৭৯৩-৫৩৭৬৭৩, ০১৯৬৬-৮২২৪৬১, ০১৭৪৩-৭২৯৬০৭ এর ব্যবহারকারী মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদাউস@ কাজল(২৮), ২। এস,এম খায়রুজ্জামান (৩৭) দ্বয়কে মিরপুর হতে গ্রেফতার করা হয়।

অত্র মামলার বাদীর স্ত্রী রোদাইনা জান্নাত শেখা (২২) গত ৭ জানুয়ারি ২০২২ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “Facebook” “Tabiha saree House” পেইজে ডিসেম্বর ১০,২০২১ ইং তারিখে প্রিমিয়াম মানের ইন্ডিয়ান শাড়ী পোষ্ট দেখে চ্যাটিংয়ের এক পর্যায়ে নেভী ব্লু কালারের শাড়ী ক্রয়ের জন্য ১৩৫০ (এক হাজার তিনশত পঞ্চাশ)টাকা ১নং আসামীর ব্যবহৃত ০১৭৯৩-৫৩৭৬৭৩ বিকাশ নাম্বারে প্রেরণ করেন।

পরের দিন দুপুরে ডেলিভারী ম্যান হিসাবে ০১৭৪৩-৭২৯৬০৭ থেকে বাদীর স্ত্রীকে ফোন করিয়া বলেন যে, আপনার পন্য আমার হাতে আমি এখন নয়া পল্টনে আছি। আপনি ০১নং আসামীকে ফোন করে প্রোডাক্ট কোড দিলে আমি শাড়ী ডেলিভারী দিব ০১নং আসামীকে ফোন করিলে তিনি বলেন বাকী পুরো টাকা পেইড করতে হবে অন্যথায় ডেলিভারী ম্যান যাবে না প্রদেয় ৪৫০ (চারশত পঞ্চাশ) টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। বাদী সরল বিশ্বাসে উক্ত নম্বরেই ১০০০ (এক হাজার) টাকা বিকাশ করিয়া কিছুক্ষন পর কোডের জন্য জানতে চাইলে বলে অর্ডার কোড আসতে সমস্যা করছে, অপেক্ষা করেন।

পরবর্তীতে তারা ফোন দিয়ে বলে, আপনার অর্ডার ২টা, ২টার টাকা পে করতে হবে। বাদী অপারগতা প্রকাশ করে টাকা ফেরত চাইলে তারা বলে, আমাদের কোম্পানীর নিয়ম টাকা ৬ (ছয়) মাস পরে দেওয়া হয়। তখন বাদী বাধ্য হয়ে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে সরল আসামীগণের কথায় পুনরায় ০১নং আসামীকে আরো ১৩৫০ টাকা ০১নং আসামীর উপরোক্ত বিকাশ নম্বরে প্রেরণ করেন।এর পর হতে আসামীদের ব্যবহৃত উপরোক্ত মোবাইল নাম্বারে অসংখ্যবার ফোন দেওয়ার পর রিসিভ করে একেক সময় একেক কথা বলতে থাকেন। বাদী উপায়ন্তর না দেখে উল্লেখিত পেইজের মেসেজে বাদী ও ০১নং সাক্ষী মেসেজ করলে তাহাদেরকে ০১নং আসামী মেসেজ অপশন ব্লক করে দেন।
আসামীদের এহেন কর্মকান্ডে বাদী ব্যক্তিগত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হইয়া অনলাইন প্রতারণার শিকার হইয়াছেন। এর প্রেক্ষিতে অত্র মামলা রুজু হয়।
তৎপরে উপরোক্ত ১নং আসামী মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদাউস@ কাজল(২৮), স্বামী-এস,এম খায়রুজ্জামান, মাতা-পারভীন বেগম, ২ নং এস,এম খায়রুজ্জামান (৩৭), পিতা-মৃতঃ ওয়াজেদ আলী, মাতা-মমতাজ বেগম,উভয় সাং-যাদবপুর, পোঃ-খড়রিয়া, থানা-কালিয়া, জেলা-নড়াইল, এ/পি-১০৫৯/১/এ পূর্ব শেওরাপাড়া, জামতলা বৌ বাজার, থানা-কাফরুল, ডিএমপি, ঢাকা এর হেফাজত হতে মোট ৬ (ছয়) টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। উক্ত আসামীদের নিকট হইতে অপরাধের কাজে ব্যবহৃত মোবাইল নং-০১৭৯৩-৫৩৭৬৭৩, ০১৯৬৬-৮২২৪৬১ নাম্বার দুটি বিকাশ করা। যাহা আসামীদের নিকট হইতে জব্দ করা হয়।

আসামীদের উক্তরুপ কর্মকান্ডে সাধারণ জনগণ আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হইয়া অনলাইন প্রতারণার শিকার হয়েছে তাদের দ্বারা সমাজের সহজ সরল মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে এবং আরো সাধারন মানুষ প্রতারণার স্বীকার হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান।

আসামীগণ পরষ্পর যোগসাজসে আরো অপর অজ্ঞাতনামা আসামীদের সহায়তায় ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রতারণা ও জালিয়াতি এবং পরিচয় গোপন করিয়া অপরাধ সংগঠন করিতেছে।
মামলাটি পিবিআই-এর এসআইএন্ডও(অর্গানাইজ ক্রাইম-দক্ষিণ) কর্তৃক তদন্ত করা হচ্ছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও জানা যায়, এই দম্পতি গত পাঁচ মাস ধরে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত। এই দম্পতি শুধুমাত্র রমজানের শুরু থেকে প্রতিদিন অন্তত ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে আসছিলো।

কিন্তু তাদের কাছে কোনো ধরনের শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য ছিলো না। কাজলের স্বামী নিউ মার্কেট থানায় অপর একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল। সুতরাং ফেসবুক পেজ ভিত্তিক অনলাইন কেনাকাটায় সাবধান ও সতর্ক থাকুন।


বিজ্ঞাপন