পিবিআই বগুড়া কর্তৃক মাত্র ১২ ঘন্টায় ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন সহ আসামী গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

বগুড়া প্রতিনিধি ঃ মাত্র বারো ঘন্টায় বগুড়ার ক্লুলেস রাকিব (১৫) হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন সহ ঘটনার সহিত জড়িত আসামী মোঃ আহসান হাবীব @ সজীব (২০), পিতা-মোঃ শফিকুল ইসলাম, গ্রাম- হিয়াতপুর, থান- গোবিন্দগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধাকে নিজ বাড়ীর পার্শের রাস্তা থেকে গতকাল শনিবার ৪ জুন গ্রেফতার করলো পিবিআই বগুড়া জেলা।

ডিসিস্ট রাকিব গত ৩১ মে, রাত্রী অনুমান ৮ টার সময় তার ছোট ভাই মোঃ রাকিব হোসেন (১৫), পিতা-মোঃ শামসুল ইসলাম শেখ, গ্রাম-হিয়াতপুর থানা-গোবিন্দগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধা।

নিজ বাড়ী থেকে বের হয়ে যায় এবং অনেক খোঁজ খবর করার পরও না পেয়ে গত জুন ৩ জুন, সকাল অনুমান ১১ টার সময় সোনাতলা থানাধীন লাহিড়ীপাড়া পাথারে লাশ পাওয়া যায়।

উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডিসিস্ট রাকিব বড় ভাই বাদী হয়ে বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার মামলা নং-০৩/৯০, তারিখ- ০৩/০৬/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করে।

অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পুলিশ সুপার, পিবিআই বগুড়া মোঃ আকরামুল হোসেন এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকতর্কা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ সবুজ আলী প্রথমে ছায়া তদন্ত শুরু করেন এবং পরবর্তীতে পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে মামলাটি পিবিআই বগুড়া স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করে।

মামলাটি স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করার পরপরই ঘটনার সাথে জড়িত মোঃ মাসুম বিল্লাহ (১৫) এবং তার দেওয়া তথ্য মতে অপর আসামী মোঃ আহসান হাবীব @ সজীব (২০), পিতা-মোঃ শফিকুল ইসলাম, গ্রাম- হিয়াতপুর, থান- গোবিন্দগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধাকে নিজ বাড়ীর পার্শের রাস্তা থেকে গতকাল শনিবার ৪ জুন, গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে উক্ত ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আহসান হাবীব সজীব নিজেই উক্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার সহ সহযোগী হিসেবে মোঃ মাছুম বিল্লাহর নাম উল্লেখ করে।

ডিসিস্ট রাকিব হোসেন ও আসামী মোঃ আহসান হাবীব @ সজীব পূর্ব পরিচিত ও একই এলাকায় বসবাস করার কারণে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ
সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ৩১ মে আহসান হাবীব @ সজীব ডিসিস্ট রাকিব হোসেন কে জানায় যে, সজীব একজন মেয়েকে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য সোনাতলা থানাধীন চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া পাথারের মাঝখানে আসতে বলেছে। তারা সময়মত সেই জায়গায় গিয়ে শারীরীক সম্পর্ক স্থাপন করবে।

পরবর্তীতে রাত্রি অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় আহসান হাবীব @ সজীব ডিসিস্ট রাকিব কে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় এবং তাদের সাথে মোঃ মাছুম বিল্লাহকে সাথে নেয়।

সোনাতলা থানাধীন চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া পাথারের জনৈক সৈয়দ জামানের আবাদী জমির মাঝখানে পৌঁছার পর ডিসিস্ট রাকিব ও আসামী আহসান হাবীব @ সজীব এর মধ্যে এই মর্মে তর্ক শুরু হয় যে, সবার আগে কে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হবে; এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলাবস্থায় রাকিবের মাধ্যমে পূর্ব থেকেই বহন করা লাঠিটি কেড়ে নিয়ে আহসান হাবীব @ সজীব ডিসিস্ট রাকিবের মাথায় ও ডান চোখের উপর আঘাত করে। রাকিব লাঠির আঘাতে পড়ে গেলে আহসান হাবীব @ সজীব পুনরায় রাকিব হাসানের মাথায় এলোপাথাড়ীভাবে ৩/৪ টি আঘাত করে। তখন আসামী সজীব ডিসিস্ট রাকিব কে ডাকতে থাকে কিন্তু ডিসিস্ট রাকিব সাড়া না দেওয়ায় আসামী সজীব ডিসিস্ট রাকিবের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

পরবর্তী সময়ে আসামী আহসান হাবীব @ সজীব তার সহযোগী মাছুম বিল্লাহকে নিয়ে ডিসিস্ট রাকিব হোসেনের লাশ হাত ও পা ধরে টেনে হেঁচড়ে সোনাতলা থানাধীন ফুলি বেগমের মালিকানাধীন চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া পাথারের ক্ষেতের মাঝখানে ডোবায় ফেলে দেন এবং কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রেখে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়।

আসামী আহসান হাবীব @ সজীবকে জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায় যে, ইতিপূর্বেও সে টাকার বিনিময়ে একাধিক মেয়েদের সাথে রাতের বেলায় বিভিন্ন গ্রামের পাথারের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করত।

গ্রেফতারকৃতদেরকে গতকাল শনিবার ৪ জুন আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী আহসান হাবীব @ সজীব ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।


বিজ্ঞাপন