নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ গতকাল রবিবার ১৯ জুন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আজ সোমবার ২০ জুন, থেকে সারা দেশে রাত ৮ টার পর দোকান, বিপনিবিতান খোলা রাখা যাবে না।
গতকাল রবিবার ১৯ জুন বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করার জন্য সরকার বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১১৪ কঠোরভাবে প্রতিপালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, এফবিসিসিআইসহ সকল ব্যবসায়ী সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকারের এ উদ্যোগ সর্বসম্মত মেনে নিয়েছেন।
তবে দোকান মালিক সমিতি আগামী ১জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত পবিত্র ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলার রাখার অনুমতির চান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের অনুরোধ বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৪ এর উপধারা ৩ এ বলা হয়েছে ‘কোন দোকান, কোন দিন রাত্রি ৮ টার পর খোলা রাখা যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কোন গ্রাহক যদি উক্ত সময়ে কেনা-কাটার জন্য দোকানে থাকেন তাহা হইলে উক্ত সময়ের অব্যবহতি আধাঘন্টা পর পর্যন্ত উক্ত গ্রাহককে কেনা কাটার সুযোগ দেওয়া যাইবে’। ১১৪ এর উপধারা (১)এ বলা হয়েছে প্রত্যেক দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে অন্ততঃ দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকিবে। কোন এলাকায় উক্তরূপ কোন প্রতিষ্ঠান কোন্ দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকিবে তাহা প্রধান পরিদর্শক স্থির করিয়া দিবেনঃ তবে শর্ত থাকে যে, প্রধান পরিদর্শক সময় সময় জনস্বার্থে উক্তরূপ নির্ধারিত দিন কোন এলাকার জন্য পূণঃ নির্ধারিত করিতে পারিবেন।
তবে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে এই ধারার বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে না, যথাঃ- ‘ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস; প্রধানতঃ তরি-তরকারী, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেষ্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান; প্রধানতঃ ঔষধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান; দাফন ও অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সমপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান; প্রধানতঃ তামাক, সিগার, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান, এবং দোকানে বসিয়া খাওয়ার জন্য [হালকা] নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান; খুচরা পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পামপ এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ীর সার্ভিস ষ্টেশন; নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান; যে কোন ময়লা নিস্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা; যে কোন শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যাহা জনগণকে শক্তি, আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে; তবে শর্ত থাকে যে, একই দোকানে অথবা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে যদি একাধিক ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয় এবং উহাদের ক্লাব, হোটেল, রেসত্দোরা, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটারঃ অধিকাংশ তাহাদের প্রকৃতির কারণে এই ধারার অধীন অব্যাহতি পাওয়ার যোগ্য তাহা হইলে সমগ্র দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানটির ক্ষেত্রে উক্তরূপ অব্যাহতি প্রযোজ্য হইবে’।
সভায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মহ. শের আলী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুসরাত জাবীন বানু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ করিম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. নূর কুতুব আলম মান্নানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, দপ্তর- সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।