সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে সেমি কন্ডাক্টর শিল্পে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

Uncategorized অন্যান্য

অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ঃ ভবিষ্যতের এক অতি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে সেমি কন্ডাক্টর শিল্পে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

বর্তমানে সারা বিশ্বের ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রযুক্তি খাতে সেমিকন্ডাক্টর বা মাইক্রোচিপ ম্যানুফ্যাকচারিং দ্রুত ক্রমবর্ধমান শিল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

এক পরিসংখ্যানের হিসেব মতে, করোনা মহামারির মধ্যেও ২০২১ সালে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের মার্কেট ভ্যালু ছিল প্রায় ৫২৭.৮৮ বিলিয়ন ডলার।

যা চলতি ২০২২ সাল শেষে সেমি কন্ডাক্টর শিল্পের বাজার মূল্য প্রায় ৫৭৩.৪৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে। তাছাড়া আগামী ২০২৯ সালে অতি সম্ভাবনাময় বৈশ্বিক সেমি কন্ডাক্টর শিল্পের মার্কেট ভ্যালুর আকার প্রায় ১.৩৮ ট্রিলিয়ন ডলারে উঠে যেতে পারে বলে ভবিষ্যত বানী করা হয়েছে। উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর সেমি কন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি হিসেবে মার্কিন টেক জায়ান্ট ইন্টেল বিগত দুই দশকের বেশি সময় ধরে একক শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে।

তবে ইন্টেলের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার টেক জায়ান্ট স্যামসাং এবং চীনের বেশকিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও কিন্তু মাইক্রো এন্ড ন্যানো চিপ ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচারিং এ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। তবে বিশ্বের সকল দেশকে ছাপিয়ে সেমি কন্ডাক্টর শিল্পে সবার উপরে উঠে এসেছে ছোট্ট একটি দেশ তাইওয়ানের নাম। অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য বলে মনে হলেও বর্তমানে তাইওয়ান সারা বিশ্বের সেমি কন্ডাক্টর শিল্পের প্রায় ৬০% বাজার একাই নিয়ন্ত্রণ করে। ৮০ এর দশকে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে জাপানের বড় ধরণের উত্থান হলেও পরবর্তীতে তারা এ শিল্পে তাদের যোগ্য স্থান ধরে রাখতে পারেনি।

সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন ডিভাইসের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব ডিভাইস গুলোর জন্য ব্যবহৃত উচ্চ প্রযুক্তির মাইক্রো এন্ড ন্যানো চিপের চাহিদাও কিন্তু ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নিজ দেশের যেকোনো প্রযুক্তি পন্য তৈরির ক্ষেত্রে যন্ত্রাংশ তৈরির লক্ষ্যে চিপ ডিজাইন এবং তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বিদেশি সেমি কন্ডাক্টর বা চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজ দেশেই চিপ প্রস্তুত করতে পারলে বৈশ্বিক সেমি কন্ডাক্টর শিল্পে বাংলাদেশও কিন্তু সীমিত পরিসরে হলেও অবদান রাখতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এসিআই লিমিটেড এবং ওয়াল্টন গ্রুপ অব কোম্পানি একেবারে নিজস্ব অর্থায়নে সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে খুব শিগগিরই বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে জমিও নিয়েছে বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট কোম্পানি ওয়াল্টন।

ওয়াল্টন তাদের নিজস্ব ২টি এ্যাসেম্বী লাইনে উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং ৫টি অ্যাসেম্বলি লাইনে ল্যাপটপ তৈরি করে। তবে এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান চিপ কিন্তু এখনো পর্যন্ত চীন বা অন্য কোন দেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়। তাই নিজ দেশের মাটিতে পরিকল্পনা মাফিক সেমি কন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হলে তৈরি পোশাক শিল্পের মতো আগামী ৫ বছরের মধ্যে বৈশ্বিক সেমি কন্ডাক্টর বাজারে সীমিত পরিসরে হলেও নিজের যোগ্য স্থান করে নিতে পারবে বাংলাদেশ।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *