পিংকি জাহানারা ঃ ক্লুলেস ও লোমহর্ষক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। এ সংক্রান্তে মুকসুদপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পর থেকেই র্যাব এর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও তদন্ত চলমান ছিল।
র্যাব এর তথ্যপ্রযুক্তি, গোয়েন্দাবৃত্তি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এই ক্লুলেস হত্যাকান্ডটি উন্মোচন করা হয়।
হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মূলহোতা সহ ২ জনকে আটক করে আটক কৃতরা যথাক্রমে, হোসাইন ইমাম ( রুবেল), এবং এস.এম ফেরদৌস (সবুজ)।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ৩ নভেম্বর, সকাল ১১ টায় এক প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করেন র্যাব -৬ এর সহকারি পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং) তারেকে আমান বান্না।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে তারা উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে এবং লোমহর্ষক ঘটনাটি বর্ণনা করে।ইতিপূর্বে আসামীরা অস্ত্র, দস্যুতা ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় জেলখানায় তাদের পরিচয় হয় এবং উল্লেখিত লোমহর্ষক ঘটনাটির প্রাথমিক পরিকল্পনা সম্পন্ন করে।গ্রেফতারকৃত আসামীরা ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে গাজীপুরে একত্রিত হয় এবং একটি হোটেলে ঘটনাটির চূড়ান্ত পরিকল্পনা সম্পন্ন করে।
গত ১৫ অক্টোবর, তারা একত্রিত হয়ে পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটার উদ্দেশ্য যাত্রা করে।পথিমধ্যে চেতনানাশক ঔষধ সহ একটি সিরিঞ্জ ক্রয় করে।
তারা কুয়াকাটা ভ্রমণ শেষে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্য নতুন ও ব্যয়বহুল গাড়ীর সন্ধান করতে শুরু করে।
দুষ্কৃতিকারী চক্রটি একটি নতুন মডেলের ব্যয়বহুল প্রাইভেট কার ভাড়া করে গত ১৬ অক্টোবর, আনুমানিক সাড় ৯ টায় কুয়াকাটা হতে গোপালগঞ্জ জেলার ভাটিয়াপাড়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করে।
পথিমধ্যে চালকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে গাড়ীর মালিক ও গাড়ীতে ব্যবহৃত ট্রাকিং ডিভাইসটির তথ্য সংগ্রহ করে।গাড়িটি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার চালকের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদে জড়ায় এবং এক পর্যায়ে গাড়িটি থামিয়ে কৌশলে চালকের দেহে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে।
এরপর চালক দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে মারধর করে হাত-পা স্কসটেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখমন্ডলে স্কসটেপ পেচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে গোপালগঞ্জ মুকসুদপুরের একটি নির্জন এলাকায় চালকের লাশটি ফেলে দিয়ে তারা গাড়িটি নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্য পালিয়ে যায়।