দেড়শ বছর সুনাম ধরে রেখেছে মেহেরপুরের ‘সাবিত্রী’ মিস্টি

Uncategorized অন্যান্য


সুমন হোসেন (যশোর) ঃ দেড়শ বছর সুনাম ধরে রেখেছে মেহেরপুরের ‘সাবিত্রী’
মেহেরপুরে প্রায় দেড়শ বছর ধরে সুনাম কুড়িয়ে আসছে সাবিত্রী মিষ্টি। চমচমের মতো লম্বা তবে চ্যাপ্টা আকারের এ মিষ্টি দেখতেও সচরাচর মিষ্টির চেয়ে ভিন্ন। যেকোনো উৎসব এলেই এর কদর বেড়ে যায় কয়েকগুণ। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও জায়গা করে নিয়েছে সাবিত্রী। অর্ডার না দিলে পাওয়া যায় না এ মিষ্টি।

জমিদারী আমল থেকেই এ মিষ্টির প্রচলন। ১৮৬১ সালে মেহেরপুর শহরের বড়বাজার এলাকার এলাকার বাসুদেব সাহা নিজ বাড়িতে মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি করতেন। পৈতৃক পেশা হিসেবে তিনি মিষ্টির ব্যবসায় আসেন। দ্রুতই জমিদারদের কাছে সুস্বাদু হয়ে ওঠে এ মিষ্টি। ইংরেজদের কাছেও মিষ্টি প্রিয়তা লাভ করে।
কাল পরিক্রমায় সারাদেশে জনপ্রিয়তা অতিক্রম করে এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পরিচিত পেয়েছে সাবিত্রী মিষ্টি। অতিথিদের নাস্তা, আত্মীয় বাড়িতে গমন, ঘনিষ্ঠজনদের উপহার, বিয়ের অনুষ্ঠান ও নানারকম আয়োজনে তিন পুরুষ ধরে চলে আসা এ মিষ্টি ছাড়া যেন চলেই না। সরকারি দপ্তরের অনুষ্ঠানগুলোতে সাবিত্রী যেন অপরিহার্য। বাজারে মিষ্টির কদর ও চাহিদা বাড়লেও পর্যাপ্ত দুধ ও জনবলের অভাবে প্রতিদিন ৬০ কেজির বেশি মিষ্টি তৈরি করতে পারে না তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যয়, মিষ্টি তৈরির কারিগর বাসুদেব সাহা ভাবতেন কীভাবে মানুষকে শতভাগ খাঁটি মিষ্টি খাওয়ানো যায়। নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তিনি সাবিত্রী মিষ্টি তৈরি করতে সক্ষম হন। এ যাত্রার প্রতিটি পদে পদে ছিল খাঁটি জিনিসের সমাহার। ফলে তার তৈরি মিষ্টিও খাঁটি হিসেবে মানুষের হৃদয় জয় করে।

শুধুমাত্র দুধ আর চিনি দিয়েই তৈরি হয় এ মিষ্টি। বাছাইকৃত গরু থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয় আর দুধ জ্বালা দেওয়ার জন্য তেঁতুল, নিম, বাবলা ও বেল জাতীয় ভারী কাঠের খড়ি ব্যবহার করা হয়। সনাতন ধর্মের পৌরাণিক চরিত্র সতী সাবিত্রী থেকেই সাবিত্রীর নামকরণ করা হয়। বাসুদেবের নাতি বিকাশ সাহা এখন এ ব্যবসার হাল ধরেছেন। মেহেরপুর শহরের বড় বাজারে মিষ্টির দোকান আছে তাদের। নাম দেওয়া বাসুদেব গ্র্যান্ডসন্স।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *