পাবনার আমিনপুর থানার মিনু রহমান এর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ পাবনা জেলার আমিনপুর থানার আলোচিত ক্লুলেস মিনু রহমান হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে, মামলার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি মোঃ সুজন শেখ পিতা মৃত নওশের শেখ সাং:ভাটিকয়া (চরপাড়া) থানা আমিনপুর জেলা পাবনা-কে আমিনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ১৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখ সকাল অনুমান ১০ টায় আমিনপুর থানার ভাটিকয়া (চরপাড়া) গ্রামের মিনু রহমানকে মৃত অবস্থায় তার ঘরের বিছানায় পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় আমিনপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা ১৭/১৯ তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৯, রুজু হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে গত ১৭ আগস্ট ২০১৯ তারিখ রাত্রি অনুমান ১০ টা থেকে ১৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখ সকাল অনুমান ১০ টার মধ্যে যেকোনো সময়ে অজ্ঞাতনামা আসামি বা আসামিরা বাদী মোঃ সহিদুর রহমান-এর বসতবাড়ির উত্তরদুয়ারি তিন কক্ষ বিশিষ্ট চৌচালা টিনের ঘরের পশ্চিম দিকে শয়নকক্ষে প্রবেশ করে তার স্ত্রী ভিকটিম মিনু রহমানকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মর্মে আমিনপুর থানার মামলা নং-৯ তারিখ ১২/০১/২০২০, ধারা-২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ( সংশোধনী/০৩) ৯(২) রুজু হয়। মামলাটি আমিনপুর থানা পুলিশ প্রায় এক বছর ধরে তদন্ত করে। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স-এর নির্দেশে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই )পাবনা তদন্ত শুরু করে।

অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম ( বার), পিপিএম-এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় পাবনা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোঃ ফজলে এলাহী-এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুস শুকুর মামলাটির তদন্ত করেন।

পরবর্তীতে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুস শুকুর পিআরএল-এ যাওয়ায় মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু রায়হান। তিনি মামলাটি দীর্ঘ এক বছর তদন্ত করেন এবং মামলাটির রহস্য উদঘাটন করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে ভিকটিম মিনু রহমান তার দূর-সম্পর্কের চাচী হয়। তার বাড়ীর পার্শ্বের বাড়ী। চাচা সহিদুর রহমান ও চাচাতো ভাই সাগর যথাক্রমে চট্রগ্রাম ও সিলেটে চাকুরী করে। বাড়ীতে ভিকটিম একাই থাকতেন। একই গ্রামের অপর আসামি(তদন্ত স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হলো না) তার চাচার সাথে আগে বিদ্যুত বিভাগে চাকুরী করতো।

হত্যাকাণ্ডের সময় এলাকায় থাকত। বাদী মোঃ সহিদুর রহমান তাকে তার বাড়ীর খোঁজ খবর রাখার দায়িত্ব দেন। সে মাঝে মধ্যে ভিকটিম মিনু রহমানের বাড়ীতে আসা যাওয়া করত। উক্ত ধৃত আসামী মোঃ সুজন শেখ এর সাথে বাদী সহিদুর রহমানের বাড়ীর সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল।

অপর আসামি শক্রপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য পূর্ব শক্রতার জের ধরে আসামীদ্বয় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ১৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখ ১ টার সময় মিনু রহমানের বাড়ীর কাছে যায়। উক্ত আসামীরা তার চাচীর বাড়ীর টিনের গেট খুলে ভিকটিম মিনু রহমান-কে ডাকলে ভিকটিম ঘুম থেকে জেগে উঠে লাইট জ্বালিয়ে দরজা খুলে দেয়।
আসামিরা ভিকটিম মিনু রহমানের গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাইট বন্ধ করে দরজা চাপিয়ে দিয়ে বাইরে আসে। এরপর আসামী মোঃ সুজন শেখ ঘটনার পরপরই পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। দীর্ঘদিন পর উক্ত আসামী তার শ্যালকের বিয়েতে আমিনপুর থানাধীন রূপপুর সাকিনে আসলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উক্ত আসামিকে গত ৫ ডিসেম্বর, আদালতে সোপর্দ করলে আসামি মোঃ সুজন শেখ নিজেকে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে পাবনা জেলার পিবিআই এর এসপি মোঃ ফজলে এলাহী বলেন উক্ত আসামী দীর্ঘদিন পলাতক ছিল তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি নিজেকে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীর নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *