দিনাজপুর প্রতিনিধি ঃ গত বৃহস্পতিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু বর্তমানের মত ছিল না। এই প্রতিষ্ঠানে সুপার সাহেব যখন লেখাপড়া করেছেন, তখন শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া এই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় আর কোন শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না।
১৯৯৬ সালে যখন আজকের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখন এই মাদ্রাসার ছাত্ররা তখন পাশ করে এরকম শিক্ষক হতে পারতো না। তারা তখন মসজিদের ইমাম হতো, কিংবা হাফেজ হতো, কিংবা মোয়াজ্জেম হতো বা এতিমখানার দায়িত্ব নিতো। ১৯৯৬ সালে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় সাধারণ শিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন।
মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় সাধারণ শিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করার কারণে আজকে মাদ্রাসার ছাত্ররা প্রকৌশলী হতে পারছে, চিকিৎসক হতে পারছে, সরকারি কর্মকর্তা হতে পারছে, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হতে পারছে, তাদের জন্য সমগ্র পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়, শুধুমাত্র শেখ হাসিনা’র একটি সিদ্ধান্তের কারণে। বাংলাদেশের ইতিহাসে, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার ইতিহাসে, এধরণের ভবন অতীতের কোন সরকার করেনি, করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সাধারণ শিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করায় আজ এর সুফল ভোগ করছে মাদ্রাসার সকলে।
প্রতিমন্ত্রী দিনাজপুরের বিরলের ভান্ডারা ইউনিয়নের ভাড়াডাঙ্গী দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার নবনির্মিত চারতলা একাডেমিক ভবনের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
মাদ্রসার সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশদি এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও সূধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ আফছানা কাওছার, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শাহীনূর ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিক সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আগে পাকিস্তান ছিল। একটি শ্রেনী ইসলামের কথা বলে, কিন্তু ইসলামের কোন পরিচর্যা করে নাই, কিন্তু তারা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার কোন সার্টিফিকেট দেয় নাই। তারা ধর্মের কথা বলে, ইসলামের কথা বলে, কিন্তু ইসলামের কোন দায়িত্ববোধ পালন করে নাই।
মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার কোন সার্টিফিকেট ছিল না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন করেছিলেন। তিনি প্রথম মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমরা দেখেছি, ৩১ বছর দেশ শাসন করেছে, কিন্তু কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার কোন স্বীকৃতি দেয়া হয় নাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আল্লামা শফী সাহেবকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, একটা কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন, কিভাবে এই কওমী মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের স্বীকৃতি দেয়া যায়, সেই শেখ হাসিনা এর নেতৃত্বেই কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা স্বীকৃতি লাভ করেছে।
বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ড এর স্বীকৃতি আর শেখ হাসিনা দিয়েছেন কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি। মাঝখান দিয়ে অনেক সময় চলে গেছে কেউ কিছু করেন নাই। আল্লামা শফী সাহেব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক সমাবেশ এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইসলামের রক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
একমাত্র ইসলাম যদি কেউ রক্ষা করতে পারে, তাহলে তা শেখ হাসিনাই পারে। এটা কোন মনগড়া কথা নয়, যে কথাগুলো আমি বললাম তা হলো বাস্তবভিত্তিক কথা।
এর আগে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে ও উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে ভবনটির উদ্বোধন করেন এবং সকালে বিরল উপজেলা ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন।