অভিনব কৌশলে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় দুদকের  মামলার আসামি ১০ ব্যাংক কর্মকর্তা

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর ছবি।


বিজ্ঞাপন

নিজস্ব  প্রতিবেদক : ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কৌশলে চার ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ ও কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগে ১০ ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বুধবার ৫ জুলাই বিকেলে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের বিষয় টি দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন।


বিজ্ঞাপন

দুদক সুত্রে প্রাপ্ত মামলার তথ্য অনুযায়ী  আসামিরা হলেন ঋণ গ্রহীতা প্রতারক আরিফ, মেসার্স জারা ফ্যাশন ও জোন কহিনুর ফ্যাশনের মালিক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, ইলেক্ট্রো ফেয়ার কনজুমার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম জামাল, ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা (লিগ্যাল) শফিউল আজম, সার্ভে ফর ভ্যালুয়েশন লিমিটেডের এমডি রুহুল আমিন, এঞ্জেল কর্পোরেটসের মালিক শেখ মাসুক রহমান, হাফিজ মোল্লা, জাহিদুল হাসান, মাসুদ রানা ও রাকিব মাহমুদ।

ব্যাংকের আসামিরা যথাক্রমে,পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ফকিরাপুল বাজার শাখার সাবেক ম্যানেজার আনিসুল করিম খান, পূবালী ব্যাংকের তৎকালীন আঞ্চলিক জেনারেল ম্যানেজার মামুন বক্স, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পান্থপথ শাখার সাবেক ম্যানেজার ফারহান খান, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের মহাখালী শাখার সাবেক ম্যানেজার ফারুক আল মাসুদ, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের বংশাল শাখার সাবেক ম্যানেজার হাবিবুল গনি, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পান্থপথ শাখার সাবেক ব্রাঞ্চ সেলস অ্যান্ড সার্ভিস অফিসার নূর মোহাম্মদ সাখাওয়াত, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের গাজীপুর চৌরাস্তা শাখার ম্যানেজার অপারেশন যোবায়ের বিন আহম্মেদ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এসপিও গোলাম মওলা আকন্দ, ওই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ফারুক হোসেন এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার শামিম আহম্মেদ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ফ্ল্যাটের মালিক ডেভেলপার কোম্পানি। ফ্ল্যাট বিক্রির খবর কোম্পানির কেউ জানেই না। অথচ ওই ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় দেখিয়ে ২০১৩ সালের নভেম্বরে তা ব্যাংকে মর্টগেজ করেছেন প্রতারকচক্র। ইউনিসন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পল্লবী থানার ৫/এ, পলাশনগরের একটি সাততলা বিশিষ্ট বিল্ডিংয়ের ১৩৫০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট প্রতিষ্ঠান বিক্রি না করলেও ওই ফ্ল্যাট ভুয়া দাতা সাজিয়ে ক্রয় দেখিয়ে পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ফকিরাপুল বাজার শাখার মর্টগেজে রেখে ৩৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঋণ গ্রহীতা আরিফ লাপাত্তা। যে ঠিকানা ব্যবহার করে ফ্ল্যাটের এই ঋণ গ্রহণ করেছে তা ছিল ভুয়া। ফলে প্রতারক আরিফকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতারক আরিফ কুমিল্লার লাঙ্গলকোট থানার ওরগঞ্জের মন্টুর ছেলে।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, এই প্রতারক আরিফ ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে পূবালী ব্যাংকে ফ্ল্যাট মর্টগেজ দিয়ে পে-অর্ডার সংগ্রহ করে তা ব্র্যাক ব্যাংকের পান্থপথ শাখায় ডেভেলপার কোম্পানি ইউনিসনের নামে একটি হিসাব খুলে সেখানে তা নগদায়ন করে অর্থ তুলে নেয়।

অনুরূপভাবে প্রতারকচক্রটি ইউনিসন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি., মহাখালী শাখা ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লি., বংশাল শাখায় আরও দুটি হিসাব খুলে। এই তিনটি ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন করার তথ্য পেয়েছে দুদক। অভিনব এ প্রতারণার মাধ্যম অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মামলাটি দায়ের করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *