কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মো: মোজাম্মেল হক বিপিএম (বার) পিপএম সেবা।
মামুন মোল্লা খুলনা : মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা পাবনা জেলার চাটমোহর থানার শাহাপুর গ্রামের এক সমভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেনারি সায়েন্সে ডিগ্রী নিয়ে ১৯৯৪ সালে ভেটেনারি সার্জন পদে জয়পুর হাট জেলায় যোগদান করেন। সেখানে চাকুরীকালীন সময়ে তিনি ১৫ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে এএসপি পদে নিয়োগের জন্য পিএসসির সুপারিশ প্রাপ্ত হন।
অনিবার্য কারনবশতঃ পুলিশে যোগদান না করে তিনি ভেটেনারি সার্জন ইশ্বরদী হিসেবে যোগদান করেন। এসময় তিনি ১৮তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে এএসপি পদে নিয়োগের জন্য আবারও সুপারিশ লাভ করেন।
তিনি ১৯৯৯সালে ২৫ জানুয়ারি সহকারী পুলিশ সুপার পদে নিয়োগ লাভ করেন। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে ২০০১ সালে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার পঞ্চগড় সার্কেল হিসেবে যোগদান করেন।
২০০৩ সালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাজশাহী সদর সার্কেল হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০০৫ সালে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি নাটোর, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং ঢাকা জেলায় কর্মরত ছিলেন।
কুমিল্লা জেলায় থাকাকালীন সময়ে তিনি ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্য হিসেবে দারফুর, সুদান গমন করেন। ১৩ মাস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি UN Peace keeping medal লাভ করেন।
২০১০ সালে ঢাকা জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মকালীন সময়ে তিনি পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং জয়পুরহাটে মাদক, সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি তিনি শিক্ষা বিস্তারের জন্য জয়পুরহাট পুলিশ লাইন একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়া বাংলাদেশে প্রথমবারের মত তিনি অবৈধ কিডনি কেনা-বেচার সংগে জড়িত একটি বড় চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হোন। এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১২ সালের পুলিশ উইকে তিনি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) লাভ করেন। অতপর তিনি ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এসময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমনের পাশাপাশি সমগ্র বগুড়া জেলা পুলিশেরর কার্যক্রমে তিনি Digitnfited করতে সক্ষম হন। এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৫ সালের পুলিশ উইকে তিনি আইজিপি ব্যাচ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় কর্তৃক আইসিটি Digital Award লাভ করেন। ২০১৫ সালের জুন মাসে তিনি পুলিশ সুপার নওগাঁ হিসেবে বদলী হন।
নওগাঁ জেলায় কর্মকালীন সময়ে তিনি মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬ সালের পুলিশ উইকে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম লাভ করেন। ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে তিনি ডিসি (ক্রাইম) হিসেবে ঢাকা মেট্রো পলিট্রন পুলিশে যোগদান করেন। একই বছর নভেম্বর মাসে তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এ যোগদান করেন। র্যাব-১৩ এ রংপুর বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেয়ায় তিনি ২০১৯ সালের পুলিশ উইকে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম সাহসিকতা লাভ করেন।
র্যাব -১৩ রংপুর কর্মকালীন সময়ে তিনি জঙ্গিবাদ দমনে সকল র্যা ব ব্যাটালিয়নের মধ্যে ১ম স্থান এবং সামগ্রীক মূল্যায়নে তৃতীয় স্থান লাভ করায় “র্যাব এওয়ার্ড ” লাভ করেন। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি র্যাব -৪ মিরপুরের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
করোনাকালীন সময়ে তিনি মানবিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধার, মাদক দমন, সন্ত্রাস দমন, ক্লুলেস মামলা ডিটেক্ট এবং জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি জঙ্গি দমনে ১ম স্থান, ক্লুলেস মামলা ডিটেকশনে ১ম স্থান এবং সামগ্রিক ভাবে ২য় স্থান লাভ করায় সর্বমোটই ৩ ক্যাটাগরিতে তিনি “র্যাব এওয়ার্ড ” লাভ করেন।
র্যাব- ৪ এ কর্মকালীন সময়ে ২০২২সালের মে মাসে তিনি ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৬/১০/২০২২ সালে তিনি হাইওয়ে পুলিশে যোগদান করেন। হাইওয়ে পুলিশে কর্মকালীন সময়ে মহাসড়কে অপরাধ দমন, দুর্ঘটনা হ্রাসকরণ, যানজট নিয়ন্ত্রণসহ ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।গত ১৫ জুলাই, ২০২৩ তারিখে তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে বদলীর আদেশ লাভ করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিনয়ী, সদালাপী এবং বন্ধুবৎসল। তিনি তার জন্মস্থান পাবনায় এবং পাবনার বাইরে অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের সংগে জড়িত। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত এবং ৩ সন্তানের জনক। বড় মেয়ে এমবিবিএস ডাক্তার, ছেলে এলএলবি (অনার্স) সম্পন্ন করে এলএলএম করছেন এবং ছোট মেয়ে একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী।