বিশেষ প্রতিবেদক : ভেজাল ও নিম্নমানের কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির উৎপাদিত বিতর্কিত ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত যেনো কোনো প্রকার থামাতেই পারছে না ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। দিনেদিনে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের একটি অধ্যাায়ের অংশ, তা হলো ট্রেডিশনাল মেডিসিন শিল্পের প্রসার ঘটানোর অঙ্গিকার। সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয় প্রতিবছর দেশের স্বাস্থ্য খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেও কোনো প্রকার উন্নতি হচ্ছে না বরং দিনেদিনে আরও অবনতি ঘটেছে দেশের জনস্বাস্থ্যের। এর কারণ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিশেষজ্ঞরা দায়ী করেছেন কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির উৎপাদিত বিতর্কিত সব যৌন উত্তেজক ও ভিটামিন ঔষধ সামগ্রীকে। তাদের মতে, এসব মুনাফাখোর অর্থলোভী কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষের শুধু মাত্র রাতারাতি অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ও ব্যবসায়ীক মনোভাবের কারণে ই জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্ছা যাচ্ছে। কাজেই আসছে না দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের মহোতি পদক্ষেপ।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা, সাভার নারায়ণগঞ্জ গাজিপুর সহ বেশকিছু এলাকায় কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ফর্মুলার বাইরে গিয়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঔষধ তৈরির অভিযোগ উঠেছে, এরমধ্যে ঢাকা সাভার এলাকার বোটানিক ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) জেনিয়াল ইউনানি ল্যাবরেটরীজ, গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি), গুডলাইফ ল্যাবরেটরীজ আয়ুর্বেদিক এবং নারায়ণগঞ্জ এর ডেলকো ফার্মা ইউনানি উল্লেখযোগ্য। উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির বিতর্কিত কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষের বিতর্কিত কর্মকান্ড নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।
প্রথমেই তুলে ধরা হলো ইউনানি ঔষধ কোম্পানির বর্তমান মাফিয়া খ্যাত বিপ্লব এর মালিকানাধীন ইউনানি ঔষধ কোম্পানির উৎপাদিত বিতর্কিত সব ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাতের কারসাজি, ঢাকার সাভার এর বোটানিক ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার -ইউ-২৭৩। উক্ত কোম্পানি গ্রো-ভিট (আরক লাহসুন) নামক ৪৫০ মিলি সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে যার কার্যকারিতা সাধারণ দুর্বলতা,ক্ষুধা মন্ধা,আহারে অরুচি, স্নায়ুবিক দুর্বলতা শীতকাতরতা বহুমুত্র ও বায়ু সঞ্চার, এর ডি.এ.আর নাম্বার -২৭৩-এ-৬২, ব্যাচ নাম্বার -৩৪, উৎপাদন তারিখ -সেপ্টেম্বর -২০২৩, মেয়াদ উত্তির্নের তারিখ – সেপ্টেম্বর -২০২৫, মুল্য -৪০০ টাকা। ডেইলি -ভিটা (শরবত আনার) ৪৫০ মিলি সিরাপ, এর কার্যকারিতা রুচিবর্ধক, পুষ্টি বর্ধক, সাধারণ দুর্বলতা প্রমশক,ভিটামিন -এ ও ভিটামিন -সিএর অভাব ও রক্ত স্বল্পতায় কার্যকর, এর ডি.এ.আর নাম্বার ইউ-১২-এ-০৫৯, ব্যাচ নাম্বার -৪০, উৎপাদন তারিখ অক্টোবর -২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ – অক্টোবর- ২০২৫, মূল্য -৩৬০ টাকা। এছাড়াও উক্ত ডেইলি ভিটা নামক ভিটামিন ঔষধ এর মোড়কে ( মার্কেটের বাই জনকল্যাণ ডিসট্রিবিউশন সাভার ঢাকা) মুদ্রিত আছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিয়ম অনুসারে ঔষধ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদিত কোন কোম্পানির ঔষধের মোড়কে অন্য কোন বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যেক্তির নাম মুদ্রণ করতে হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে অবশ্য ই অনুমোদন নিতে হবে এ ক্ষেত্রে আলোচিত ও সমালোচিত তথা বিতর্কিত ইউনানি ঔষধ কোম্পানি বোটানিক ল্যাবরেটরীজ কর্তৃপক্ষ কি আদৌও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়েছেন ?
এছাড়াও উক্ত কোম্পানি পিউভিট (শরবত ছেহাত আফজা) ৪৫০ মিলি সিরাপ এর কার্যকারিতা সাধারণ বলকারক, স্বাস্থ্যবর্ধক, ও পরিপাকতন্ত্রের শক্তি বর্ধক, এর ডি.এ.আর নাম্বার -ইউ-১২-এ-০৫১, ব্যাচ নাম্বার -৪২, উৎপাদন তারিখ সেপ্টেম্বর -২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ সেপ্টেম্বর- ২০২৫ এবং মূল্য – ৩৬০ টাকা। আনার দানা ( হাব্বে য়ারকান) ৩০ টি ট্যাবলেট পটে বাজারজাত করছে এর কার্যকারিতা জন্ডিস,নারীর প্রতিবন্ধকতা, আহারে অরুচি অসাধারণ দুর্বলতা পিণ্ড বিস্মরণ, যকৃতে দুর্বলতা, ও যকৃত প্রদাহে কার্যকর, এর ডি. এ. আর নাম্বার -ইউ -এ-১৫, ব্যাচ নাম্বার অস্পষ্ট, উৎপাদন তারিখ সেপ্টেম্বর- ২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ সেপ্টেম্বর- ২০২৫, মূল্য ৩৬০ টাকা।
বি -ট্যাব (হাব্বে কাবেদ নৌশদনী) ৩০ টি ট্যাবলেট এর পট, এর কার্যকারিতা, পাকস্থলী দুর্বলতা, হজমকারী, শক্তিবর্ধক, যকৃত প্রদাহে, ক্ষুধামন্দা ও রুচি বৃদ্ধি কারক, এর ডি.এ.আর নাম্বার- ইউ-১২ -এ -০১৭,ব্যাচ নাম্বার -৪৯, উৎপাদন তারিখ আগস্ট- ২০২৩, মেয়াদ উত্তীনের তারিখ আগস্ট- ২০২৫, মূল্য ৩৫০ টাকা। হেলফিট (হাব্বে হেলতীত) ৩০ টি ট্যাবলেট এর পট, এর কার্যকারিতা রুচি বর্ধক ও হজমিকারক, ডিএআর নাম্বার -ইউ- ১০-এ-০২৫, ব্যাচ নাম্বার -২৪, উৎপাদন তারিখ মার্চ- ২০২৩, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ মার্চ- ২০২৫, মূল্য ৩৮০ টাকা। ঔষধ শিল্পের সাথে জড়িত এমন একটি সূত্র জানায় ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মধ্যে প্রায় শতাধিক কোম্পানির ব্যবসা একাই বোটানিক ল্যাবরেটরীজ ইউনানির মালিক বিপ্লব করছে, বোটানিক ল্যাবরেটরী ইউনানির ঔষধ কম মূল্যে বিক্রি করায় বোটানিকের ঔষধ রাজধানী সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মুড়িমুড়কির মত বিক্রি হচ্ছে।
৩৫০ ও ৪০০ টাকার রীতিমত ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি করায় বোটানিক ল্যাবরেটরীজের ঔষধ বাজারে প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে। দেশের স্বনামধন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বোটানিক ল্যাবরেটরীজের ঔষধ। উক্ত কোম্পানির মালিক যার উৎপত্তি কলিকাতা হারবাল নামক কথিত ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ এর সর্ব রোগের মহা ঔষধ বিক্রি ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থেকে। বিপ্লব ও তার ভাই মিলে খোদ রাজধানীতে ই খুলে বসেছিল কলিকাতা হারবাল নামক ৪/৫ টি প্রতিষ্ঠান। কলিকাতা হারবাল নামক প্রতিষ্ঠান থেকে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যায় বিপ্লব এরপর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মেশিন অপারেটর ওরফে পিওন শহীদের মধ্যস্থতায়(বর্তমানের ফরিদপুরের শিরিন ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর মালিক) রেজাউল করিমের সাথে পর্টনাশীপে রোজ হ্যাভেন ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর মালিকানা, স্থান ও নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠিত হয় বোটানিক ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি)। এর কিছুদিনের মধ্যেই রেজাউল করিম কে সরিয়ে দিয়ে বোটানিক ল্যাবরেটরীজ ইউনানি’র একক মালিক হয় বিপ্লব।
অল্প সময়ের ব্যাবধানে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া বিপ্লব হয়ে পড়ে বেপরোয়া ও অপ্রতিরোধ্য ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাতের একচেটিয়া ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের কারবারি। ইতোমধ্যে পিওন শহীদের মধ্যস্থতায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি ও ঢাকার মহাখালীর (সাবেক জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট) বর্তমানে ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরির কতিপয় কর্মকর্তার সাথে সক্ষ্যতা গড়ে ওঠে। এ ছাড়াও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যলয়ের নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সাভার এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চলে আসে বিপ্লবের হাতের মুঠোয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিপ্লবের হাতের মুঠোয় আসার কারণ স্বরুপ জানা গেছে, বিপ্লব প্রতি মাসেই তাদের মোটা অংকের কমিশন দিয়ে একপ্রকার বোটানিক ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর অঘোষিত উপদেষ্টা বানিয়ে রেখেছে।
দ্বিতীয় বিতর্কিত ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষ আবু সালেহ মুসা’র বিষয় টা একটু আলোকপাত করা হলো, রাজফুলবাড়ি, সাভার ঢাকার গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার -ইউ-১৯৭, উক্ত কোম্পানির ৫৩ ঔষধের রেকর্ড ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে পাওয়া গেছে। স্মারক নং ডি.জি.ডি.এ ইউনানী ১৪৭/০৯/২৫৮ তারিখ ১৫/০৯/২০১৯ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের কারখানা, (0১) হাব্বে হায়াতীন মুরাকাব (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম লুমাটন, (০২) হ্যাকো হায়াতীন মুরাকাব জওয়াহারদাত (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম জিএইচ -ভিট, (০৩) ইভেনিং পিমরোজ (ক্যাপসুল) বাণিজ্যিক নাম ইপিওজি, (০৪) আরব আজীব (তরল) বাণিজ্যিক নাম জিএইচ-২০,০৬ মরহুম আজিম (মলম) বাণিজ্যিক নাম-টাররাসিল (০৬) এই ছয়টি পদের বাজারজাতকরণ স্থগিত করা হলো ।
উক্ত প্রোডাক্টগুলি সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান নির্দেশে ওষুধ গুলো বিক্রি বাজারজাত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো বলে নির্দেশনা জারি করেছিলেন। কিন্তু এতোসব নির্দেশনা জারির পরও থেমে থাকেনি গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর মালিক আবু সালেহ মুসার অবৈধ কর্মকান্ড। উল্লেখিত ঔষধ সামগ্রী বাজার থেকে প্রত্যাহার ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কে অবগত করা তো দুরের কথা বরং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক সাময়িক বাতিল কৃত ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত বাড়িয়ে দিয়ে পূর্বের উৎপাদন তারিখ দেখিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কে উল্টো বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে চালিয়েছেন ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত। গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর মালিক আবু সালেহ মুসার আরেকটি কোম্পানি রয়েছে, যার নাম গুড লাইফ আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরীজ নতুন পাড়া হেমায়েতপুর সাভার, , উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার নং- আয়ু- ০৪৪ এবং গুড হেলথ লিঃ ইউনানী এই দুটি কোম্পানির ঔষধ বর্তমানে বাজারে মুড়িমুড়কির মত চলছে।
পিউমিন মাল্টি ভিটামিন ও মাল্টি মিনারেল সিরাপ ৪৫০মিঃ, ডি এ আর নং -আয়ু-০৫২-এ-০২৩, ভেনাপ্রো ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং -ইউ-১৪৭-এ-০১৭, এলভা ৪৫০ মিঃ ডি এ আর নং -আয়ু-০৫২-এ-০৪, জিংকোমিক্স ৪৫০ মিঃ, আয়ু- ০৫২-এ-০২২, ইকোরেক্স ৪৫০ মিঃ ভি এ আর নং -আয়ু-০৫২-এ-০৩২,এ সকল ঔষধ সামগ্রীতে কালার ফ্লেভার ও অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে ঔষধ তৈরি করছে। এসব ওষুধ সেবন করে মানুষের কোন প্রকার উপকার তো হয় না বরং এসব ঔষধ সেবনের ফলে নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছে জনসাধারণ। গুড হেল্থ ল্যাবরেটরীজ এবং গুডলাইফ ল্যাবরেটরীজ আয়ুর্বেদিক এর মালিক আবু সালেহ মুসা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও ঔষধ তৈরির সাথে সম্পৃক্ত মহলের কাছে বলেন, তিনি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যলয়ের নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সাভার এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ই নিজস্ব ফর্মুলায় ঔষধ সামগ্রীর উৎপাদন ও বাজারজাত করেন। ঔষধের টেস্টিং ক্রাইটেরিয়া কি তা তিনি জানার প্রয়োজন মনে করেন না।
এবার আসা যাক সাভারের হেমায়েতপুরের জেনিয়াল ইউনি ল্যাবরেটরীজ এর বিষয়ে , উক্ত কোম্পানির উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার -২১৭, উক্ত কোম্পানির ৭৭ টি ঔষধের রেকর্ড ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে পাওয়া গেছে। জেনিয়াল ইউনানি ল্যাবরেটরীজ এর উৎপাদিত সকল ঔষধের মান অত্যন্ত নিম্নমানের এসকল ঔষধ তৈরি কালে সম্পূর্ণ কালার ফ্লেভার ও কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় ফলে এসব ঔষধ সেবনে দেহের কোন উপকারে আসে না উপরন্ত বিভিন্ন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়ে সাধারণ জনগণ কে মোটা অংকের অর্থ গচ্ছা দিতে হয়।
উক্ত কোম্পানির উৎপাদিত ভিটামিন যৌন শক্তি বর্ধক ট্যাবলেট ক্যাপসুল সিরাপ ব্যথার ঔষধ ট্যাবলেট ক্যাপসুল সিরাপ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ট্যাবলেট ক্যাপসুল সিরাপ উৎপাদন কালে বাংলাদেশ জাতীয় ইউনানী ইউনানী ফর্মুলারির নিয়মকানুন মানা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে মেলটোন ৪৫০ মিলি সিরাফ,হিমোজেন ক্ষুধা বর্ধক ও রক্ত বর্ধক ৪৫০মিলি সিরাপ ,গাওয়াজেন ৪৫০মিলি সিরাফ, লুবুব কবীর ১০০ গ্ৰাম হালুয়া, ভিগোরী ৪৫০মিলি শক্তি বর্ধক সিরাপ, জেনিয়াল তুলসি ১০০ মিলি (এ্যালকোহল মুক্ত) সিরাপ, লিমোজেন ৪৫০ মিলি সাধারণ দুর্বলতা ও ক্ষুধা বর্ধক সিরাপ, জি-ট্যাব ন্যাচারাল ক্যালসিয়াম ৩০ টি ট্যাবলেট এর পট , রিউপেন (হাব্বে সুরঞ্জন) বাত-বেদনায় দ্রুত কার্যকরী বলে দাবি করা হয়, মা’জুন লানা নামক ১০০ গ্রাম, হালওয়া, গার্লজেন ৫০ টি ক্যাপসুল, এ্যাজমাটন ৫০টি ট্যাবলেট, মা – জুন মুগাল্লিয, জেনঅয়েল ২০ গ্রাম ( বিশেষ অঙ্গের) মালিশ, আমরোজেন (শরবত আমরুদ) ৪৫০ মিলি সিরাপ উল্লেখযোগ্য। জেনিয়াল ল্যাবরেটরীজ (ইউনানি) এর মালিক রশিদ কোম্পানির সৃষ্টিকাল থেকেই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ পরিপন্থী কার্যকলাপকে লিপ্ত থেকে অবৈধ অন-অনুমোদিত যৌন উত্তেজক ঔষধ সামগ্রীর উৎপাদন ও বাজারজাত করার দায়ে কয়েকবার জেল খাটে এবং র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায় ও করেছে। রশিদ জেল থেকে বেরিয়ে আবারও একই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে সে অতি অল্প সময়ের ব্যাবধানে ঢাকার সাভারসহ রাজধানীতে বিপুল সম্পত্তিও ফ্ল্যাটের মালিক বনে গেছেন।
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক শিল্প মালিক সমিতির উর্ধতন নেতৃবৃন্দের মতে দেশের ট্রেডিশনাল মেডিসিন শিল্পের প্রসার ও বিকাশ ঘটাতে হলে উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির উৎপাদিত বিতর্কিত সব ঔষধের নমুনা সংগ্রহ করে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরিক্ষা করাসহ ওই সকল ঔষধ কোম্পানির ঔষধের কারখানায় চার বা ততোধিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে কোম্পানি সমুহে তাতক্ষনিক পরিদর্শন পূর্বক ব্যাবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবী হয়ে পড়েছে তা না হলে উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষ আরও বেপরোয়া হয়ে পড়বে এবং ওই সকল ঔষধ কোম্পানির মতো অন্যান্য ইউনানি ঔষধ কোম্পানির মালিকরা ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাতে উৎসাহিত হবে, ফলে ভেস্তে যাবে দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের মহোতি পদক্ষেপ।
বোটানিক ল্যাবরেটরীজ (ইউ) এট নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরিচালক মোঃ আশরাফ হোসেন, উপ-পরিচালক আব্দুল মালেক, সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম। জেনিয়াল ল্যাবরেটরীজ ইউনানী এর নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, উপ-পরিচালক আব্দুল মালেক, সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন। গুড হেলথ ল্যাবরেটরজ ইউনানী এর নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান, উপ-পরিচালক আব্দুল মালেক, সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন। গুড লাইফ (আয়ু) এর নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান, উপ-পরিচালক, আব্দুল মালেক এবং ডেলকো ল্যাবরেটরীজ ইউনানী এর নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান, উপ-পরিচালক আব্দুল মালেক। এছাড়াও নারায়নগঞ্জ ও সাভার এলাকার স্থানীয় কর্মকর্তারা তো আছেন ই। এই সকল কর্মকর্তা ও উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষের বক্তব্য জানতে সবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে উল্লেখিত ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষ ও উল্লেখিত কোম্পানির নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তাদের কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।
সচেতন মহল থেকে বারংবার যে সকল দাবি উঠে এসেছে তার মধ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের যথাযথ ব্যাবহার। তাদের মতে সময়োপযোগী ও আধুনিক একটি টেষ্টিং ক্রাইটেরিয়া তৈরি এবং তা ঔষধ কোম্পানির কারখানা ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে সংরক্ষণ করে টেস্টিং ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি ও বাজারজাত করা এবং ইউনানি, আয়ুর্বেদিক হোমিওপ্যাথিক ও হারবাল সকল ঔষধের মুল্য ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারণ করাসহ সকল ইউনানি, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও হারবাল ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাতের উপর শুল্কারোপ করা, শুল্কারোপ করলে বিতর্কিত এসব ঔষধ কোম্পানির উৎপাদিত বিতর্কিত সব ঔষধ কম মুল্যে বাজারজাত করতে পারবে না, পাশাপাশি ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত অনেকাংশেই কমে যাবে।
এবিষয়ে সচেতন মহল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে যুগোপযোগী পদক্ষেপ দাবি করেন।