যশোরের শার্শা উপজেলার পশু’র হাটের খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ খুলনা গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

মোঃ আসাদুজ্জামান (বেনাপোল) :  দেশের দক্ষিনাঞ্চালের বৃহত্তর পশুরহাট যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাত মাইল পশু হাটের খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জান াগেছে। এক অভিযোগে জানাগেছে, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদেও সাবেক চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু অবৈধ ভাবে জোর করে ক্ষমতার জোরে পশু হাট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খাজনা আদায় করে নাম মাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছে। তবে কি কারনে এবছর এই হাটের ইজারার মেয়াদ ১লা বৈশাখ শেষ হলেও নতুন করে ইজারা দেওয়া হয়নি তাও নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।


বিজ্ঞাপন

সূত্রে জানাগেছে, দক্ষিন বঙ্গের সব থেকে বড় পশু হাট শার্শার সাত মাইল পশু হাট। এখানে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার দুই দিন হাট বসে। দুই দিনের এই হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল বেচাকেনা হয়। সরকারী ভাবে প্রতি বছর মোটা অংকের টাকায় এই হাট ইজারা দেওয়া হয়। গত ১৩২৮ বঙ্গাব্দে সাত মাইল পশু হাটের ইজারা ডাক ছিল সাড়ে ৮ কোটি টাকা, ১৩২৯ বঙ্গাব্দে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ও ১৩৩০ বঙ্গাব্দে এই হাটের ডাক ছিল সাড়ে ১০ কোটি টাকা। তবে নতুন বছর ১৩৩১ বঙ্গাব্দে এই হাটের কোন ডাক বা ইজারা হয়নি। যে কারনে পূর্বের ইজারাদারেরা সরকারী আইন অমান্য করে হাটের খাজনা আদায় করছে।


বিজ্ঞাপন

সূত্রে জানা গেছে, নতুন বছর ১৩৩১ বঙ্গাব্দে সাত মাইল পশু হাটের কোন ডাক বা ইজারা না হওয়ায় শার্শা উপজেলা প্রশাসন হাটের খাজনা আদায়ের জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি কমিটি গঠন করে দেয়। যার স্মারক সংখ্যা ০৫.৪৪.৪১১০.০০২.১৮৫.০০৫.২০২৪-৩৪৮(ব)। যা স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, যশোর জেলা প্রশাসক, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও শার্শা সহকারী কমিশনার(ভুমি) কে অবহিত করা হয়। উক্ত কমিটিতে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক কে প্রধান করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, বাগআঁচড়া ইউনিাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, শার্শা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, বাগআঁচড়া ইউপি সদস্য আবু তালেব, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আসমা আক্তার, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার(ভুমি) শার্শা।

সূত্রে আরও জানা গেছে, উক্ত হাটের মেয়াদ গত চৈত্র মাসে শেষ হলেও উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া খাজনা আদায় কমিটি আজও হাটের খাজনা আদায় করতে পারেনি। যে কারনে পূর্বের ইজারা কমিটি অনিয়ম ও সরকারী নিয়ম অমান্য করে ব্যবসায়ী ও সাধারন ক্রেতা ও বিক্রেতাদের হাজার হাজার টাকা পকেট কাটছে। হাটে বিক্রির জন্য প্রতি পশু থেকে ১৫০ টাকা খাজনা আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না । যার প্রতিটি পশুর খাজনা আদায় ১৫০ টাকার বিপরীতে আদায় করা হচ্ছে ৫০০/১০০০/১২০০/১৫০০/২০০০/= টাকা করে। এ ছাড়া হাটে ৩ হাজার ব্যবসায়ীকে প্রতি ১ বছরের জন্য ৩ হাজার পাশ দেওয়া হয়েছে। সেখান থে আদায় করা হয়েছে প্রচুর টাকা।

যে কারনে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সাতমাইল পশু হাটের খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বাগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গদের সাথে নিয়ে অবৈধ ভাবে জোর করে পশু হাট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খাজনা আদায় করে নাম মাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছে । প্রতি হাটে প্রায় ১২/১৫ লক্ষ টাকা আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে জমা পড়ছে ২লক্ষ টাকা। বাকী টাকা পকেটস্থ করছে পূর্বের ইজারাদারেরা।

হাটের একাধিক সুত্রে জানাগেছে শার্শার একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধির মদদে জোর করে ক্ষমতার জোরে সাত মাইল পশু হাট দখল করা হয়েছে। যে কারনে সাত মাইল পশু হাট থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

সাত মাইল পশু হাটের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল বলেন সাত মাইল পশু হাট সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। এ ব্যাাপারে কিছু বলতে পারবো না। তবে কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহম্মেদ টিংক বলেন এ বছর সাত মাইল পশু হাট ইজারা হয়নি। আমরা শার্শা উপজেলা প্রশাসনকে হাটের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে কিছুটা সহযোগিতা করি। তিনি বলেন হাটের টাকা পয়সার ব্যাপারে আমি জড়িত না।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশী’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন নতুন বছরে সাত মাইল পশু হাটের ইজারা বা ডাক হয়নি। যে কারনে ৭ সদস্য বিশিষ্ঠ খাজনা আদায় কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারী ভাবে জনবলের অভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খাজনা আদায় করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া হাটে কোন অনিয়ম বা দূর্ণীতির অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে অপরাধীর বিরুরেদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *