মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গতকাল সোমবার ২১ জুলাই ঢাকার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুলের উপর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অনেকের সাথে নিভে গেছে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কুনিয়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তারের জীবন প্রদীপ।

নিহত ফাতেমা আক্তার কুয়েত প্রবাসী বনি আমিন একমাত্র কন্যা। ২২ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় নিহত ৯ বছরের ফাতেমা আক্তারকে তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীতে সমাহিত করা হয়েছে।

উপজেলার কুনিয়া গ্রামের কুনিয়া কওমী মাদ্রাসায় জানাজা শেষে ফাতেমাকে মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছ।

মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ফাতেমার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে স্বজন ও গ্রামবাসীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাকে এক নজর দেখার জন্য শতশত মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করেন।

মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সোমবার রাতেই দেশে ছুটে এসেছেন কুয়েত প্রবাসী বাবা। কিন্তু বাড়িতে এসে মিলল শুধু মেয়ের নিথর দেহ।
ফাতেমার বাবা বনি আমিন শেখ বলেন, ‘পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে প্রবাসে আছি। শুধু ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেছি। মেয়েটাকে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম, যাতে তারা মানুষের মতো মানুষ হতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার নিষ্পাপ সন্তানের মুখটা আগুনে ঝলসে গেছে, আমি ওর মুখের দিকে তাকাতে পারিনি। বাবা হয়ে এ দৃশ্য আমি কিভাবে মেনে নেব।’
ফাতেমার মামা স্বপন মীর বলেন, “আমার বোন দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে উত্তরায় থাকে। ফাতেমা ছিল সবার বড়। “ফাতেমা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ত এবং তার ভাই ওমর শেখ প্লে শ্রেণীতে পড়ত। ফাতেমা প্লে থেকে মাইলস্টোনে ভর্তি হয়। ওমরকে এ বছর ভর্তি করা হয়েছে। ওরা দুই ভাই-বোন প্রতিদিন এক সঙ্গে স্কুলে যেত কিন্তু সোমবার আমার ভাগ্নের জ্বর হওয়ায় ফাতেমা একা স্কুলে যায়।
তিনি আরো বলেন, “সোমবার বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাজধানীর সব হাসপাতালে খুঁজতে থাকি ভাগ্নিকে। কোথাও তার সন্ধান পাচ্ছিলাম না। পরে রাত ৯টার দিকে খবর পাই ফাতেমার মরদেহ সিএমএইচ হাসপাতালের মর্গে পড়ে রয়েছে। সেখানে আমরা তাকে শনাক্ত করি।” ফাতেমার আক্তারের জানাজায় চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।