বিশ্ব ‘বাবা’ দিবস আজ, দিবসটি পালন নিয়ে ফেসবুকে পক্ষ-বিপক্ষ

জাতীয়

আজকের দেশ রিপোর্ট : বাবা’ ছোট্ট একটি শব্দ। পরিবারের প্রধান অভিভাবক, নিয়ন্ত্রক ও তত্ত্বাবধায়ক। যিনি পুরো সংসারকে আগলে রাখেন, সংসারের সুখ-দুঃখের সাথে মিশে একাকার হয়ে যান, সংসারের জন্য যিনি নিজের সুখ বিসর্জন দেন তিনিই বাবা। আজ বিশ্ব ‘বাবা’ দিবসে পৃথিবীর সকল বাবাদের প্রতি রইল সশ্রদ্ধ সালাম।


বিজ্ঞাপন

মূলতঃ বাবাকেই বলা হয় পরিবারের বটবৃক্ষ। বটবৃক্ষের ছায়ায় পরিবারের অনেক সদস্যই শান্তির স্বাদ গ্রহণ করেন। আর বাবারা সন্তানের শান্তি দেখে সুখ অনুভব করেন। সন্তানের প্রতি পিতা বা বাবার ভালোবাসা চিরকালের।’ বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের একটি অন্যতম দিন বাবা দিবস।

আজ সেই দিন। প্রতিবছর জুনের ৩য় রোববার বিশ্বব্যাপী ‘বাবা’ দিবস উদ্যাপিত হয়। পশ্চিমা বিশ্বে এ ধারণা প্রচলিত হলেও আমাদের দেশেও দিনটি উদ্যাপন করা হয়।

১৯০৮ সালে ১ম বাবা দিবসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টে প্রথম ৫ জুলাই দিবসটি পালন করা হয়। এরপর ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুনের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসাবে নির্ধারণ করেন।

১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে দিনটির উদ্যাপন আরও আড়ম্বরভাবে হয়ে থাকে। আজ বিশ্বের সব বাবার প্রতি ভালোবাসা জানাবেন সন্তানরা। ভালোবেসে উপহারও দেবেন।

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের ওয়ালগুলো ভরে যাবে প্রিয় বাবার ছবিতে। যাদের বাবা বেঁচে আছেন তারা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ছবি আপলোড করবেন। আর যাদের বাবা নেই, তারা বাবার ছবি পোস্ট করে, বাবাকে নিয়ে লিখে স্মৃতিচারণ করবেন।

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে বাবা-মা দুজনই সন্তানকে লালনপালন করে বড় করে তোলেন। কারও দায়িত্ব কারও চেয়ে কম নয়। আধুনিককালে একক পরিবারে বাবার গুরুত্ব অপরিসীম। অনেক পরিবারে বাবা-মা দুজনই উপার্জন করেন।

কিন্তু এখনো আমাদের দেশের অনেক পরিবারে বাবাই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবার উপার্জনেই সংসারের সব ব্যয়নির্বাহ হয়। সন্তানের শারীরিক, মানসিক দুই ধরনের বেড়ে ওঠার জন্য বাবা তার সবকিছু উজাড় করে দেন। অনেক বাবা নিজে আধ পেট খেয়েও সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেন।

সন্তানকে সুস্থ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে বাবা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। বাবার আদর্শ, মূল্যবোধ, চিন্তাচেতনা সন্তানের ওপর দারুণভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এজন্য বলা হয়ে থাকে-বাবার হাত ধরেই সন্তানের চলতে শেখা। এ চলতে শেখার পাঠ সন্তানকে শিশুকাল থেকেই বাবা দিতে শুরু করেন। সন্তানের মঙ্গলার্থেই বাবার সারা জীবন ব্যয় হয়।

বর্তমান করোনাকালে অনেক বাবা ভালো নেই। অনেক বাবা কাজ হারিয়েছেন, অনেকের উপার্জন কমে গেছে। এরপরও সব কষ্ট সহ্য করে সন্তানকে আগলে রাখছেন বাবা। সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে তিনি নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাবার সেই কষ্টের প্রতি সন্তানরা আজ শ্রদ্ধা জানাবে।

তবে বিশ্ব বাবা দিবস উদযাপন বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভাজন দেখা দিয়েছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে, তাদের মধ্যে এক পক্ষ মনে করেন, ‘বাবা’ দিবস একদিনের জন্য উদযাপন হয় কেন। বাবাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য একটি দিবস উপযুক্ত নয়। বছরের প্রতিটি দিবসই বাবাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য, এমনকি আজকের আনুষ্ঠানিক দিবসের মতোই হোক বছরের প্রত্যেকটা দিবস। তারা এমনটিই মনে করেন।

আরেক পক্ষ মনে করেন, বছরের প্রত্যেকটা দিবসে বাবাদের এরকম গুরুত্বসহকারে ভালোবাসা প্রদর্শন করার সুযোগ থাকেনা সন্তানদের জন্য, কর্মব্যস্ততার যুগে প্রায় প্রতিটি সন্তানকেই জীবন জীবিকার জন্য ব্যস্ত থাকতে হয়। সে কারণেই বাবার প্রতি সন্তানরা গুরুত্বসহকারে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ভালোবাসা প্রদর্শন করার সুযোগ হয়ে উঠেনা। এজন্য তারা মনে করেন, বছরের একটি দিবসই হোক বাবাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য।