নিজস্ব প্রতিবেদক : নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সামাজিক আন্দোলন এর পাশাপাশি প্রতিবাদি হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে শতভাগ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করবে সরকার।
ইস্কাটন গার্ডেন বিআইআইএসএস অডিটোরিয়ামে নিরাপদ খাদ্য দিবস ও টোল ফ্রি কল সেন্টার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন।
সেই সঙ্গে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে যেকোন ধরনের অভিযোগ ও পরামর্শর জন্য টোল ফ্রি কল সেন্টারে ১৬১৫৫ নাম্বারে ফোন করার আহ্বন জানান তিনি।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্যে ভেজাল কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হবার বিধান বঙ্গবন্ধু সময় থেকে শুরু হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার তবে এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং এটা সরকার সংস্থা বা কারো একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমদানি রপ্তানি ঠেকানোর জন্য নয় দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন করা জরুরি।
আমরা স্বাধীনতা অজর্ন করেছি নয় মাসে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যত তারাতাড়ি সম্ভব আমরা খাদ্যে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমাদের নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষ যেভাবে কাজ করছে তাদের কাজকে আমি সাধুবাদ জানায় তারা সারা দেশের গ্রামে গঞ্জে পৌঁছে গেছে।
প্রথমে ১৬ থেকে ১৭ জন নিয়ে জেলায় জেলায় কাজ শুরু করা হয়েছিল তা এখন তা ইউনিয়ন পর্ায়ে পৌছে গেছে। সাধারণ মানুষও সচেতন হয়েছে। নিরপদ খাদ্য নিশ্চিত করনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ভেজাল খাদ্য বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে নিয়মিত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যারা ভে্যজাল দিয় সেই জায়গা থেকে প্রতিরোধ করা শুরু করতে হবে। খাদ্য অনিরাপদ যেকোন সময়ে হতে পারে। ভ্যেজালমুক্ত জিনিষ কিনে নিয়ে এসে বাড়িতে তৈরী করার সময়ও খাদ্য অনিরাপদ হতে পারে। আমরা যারা যেনে শুনে খাদ্য অনিরাপদ করি, ভোক্তা ঠকানো কিংবা বানিজ্যিক লাভের আশায় খাদ্য ভেজাল কারীরা জ্ঞানপাপী। তাই আমি মনে করি আমাদের আগে নিজ নিজ আস্থা আনতে হবে। আস্তাহীন জাতি কোনদিন আগাতে পারে না। যে আমি কি করছি? আমি ভ্যেজাল বা অনিরাপদ খাদ্য খাচ্ছি কিনা এবং আমি নিজে অনিরাপদ হচ্ছি কিনা। আগে সেটার কিন্তু নিজের উপর আস্থা আনতে হবে। দায়বদ্ধতা থেকে সচেতন হওয়া জরুরি।
যে জাতি এতোগুলো ধাপ পার হয়ে স্বাধীনতা আনতে পারে সে জাতি খাদ্যে নিরাপদতা আনতে পারবে না এটা আমি বিশ্বাস করি না। খাদ্য নিরাপদ করতে আরেকবার আন্দোলন করতে পারবে না এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমরা সবাইকে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি।
গ্রামের মানুষ থেকে শহুরে মানুষেরা বেশি অনিরাপদ খাদ্য খায়। সভা সেমিনার কিংবা মুখে বলে নয় নিরাপদ খাদ্য বাস্তবে নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা, কৃষিসহ সকল কিছুর পাশাপাশি খাদ্যে স্মার্ট হতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সকলে অঙ্গিকার বদ্ধ হতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যসচিব মো: ইসমাইল হোসেন এনডিসি। তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার তবে এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং এটা সরকার সংস্থা বা কারো একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমদানি রপ্তানি ঠেকানোর জন্য নয় দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন করা জরুরি।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কাইউম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদার। আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুখি সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার লক্ষে্য তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় উত্তির্ণ করার লক্ষ্যে প্রয়োজন সুস্থ ও কর্ক্ষম জাতি। এসময় খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে কমর্শালা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে খাদ্যের নিরাপত্তার সকলকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আর্ন্তজার্তিক নিরাপদ খাদ্য বিশেষজ্ঞ ও সাবেক কোডেক্স চেয়ারম্যান জনাব সনজয় দাভে এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ।
