স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমানে যুদ্ধবিমানের পেলোড ক্যাপাসিটি এয়ার কমব্যাট মিশনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে দেখা হয়।ফাইটার জেটের পেলোড বা অস্ত্র বহণ করার সক্ষমতার বিচারে কাগজে কলমে হলেও সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে চীনের চেংদু জে-২০ স্টেলথ জেট ফাইটার। চীনের দেয়া ভাষ্যমতে, তাদের নতুন প্রজন্মের জে-২০ স্টিলথ জেট ফাইটার আনুমানিক ১১,০০০ কেজি বা ১১ টন পে-লোড বহণ করতে সক্ষম। যদিও বাস্তবে স্টেলথ জেট ফাইটারে এত বিপুল ওজনের পেলোড ক্যাপাসিটি থাকার সুযোগ নেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সত্তরের দশকের জয়েন্ট স্টাইক এফ-১৫ এর পরীক্ষিত পে-লোড ক্যাপাসিটি বা অস্ত্র বহণ করার ক্ষমতা ১০,৪০০ কেজি বা ১০.৪ টন। যা কিনা যুদ্ধবিমানটিকে এক রকম নিশ্চিতভাবেই বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় সক্ষমতার জেট ফাইটারের স্থানে নিয়ে গেছে বহু আগেই। এফ-১৫ প্রায় চার দশক ধরে আকাশ যুদ্ধে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে।
তবে মার্কিন বোয়িং কর্পোরেশনের তৈরি সর্বশেষ এফ-১৫ইএক্স সিরিজের এডভান্স মাল্টিরোল যুদ্ধবিমানের ম্যাক্সিমাম পেলোড ক্যাপাসিটি ১২ টন। কালজয়ী এই যুদ্ধবিমানটি একসাথে মোট ১২টি এআইএম-১২০ডি সিরিজের এয়ার টু এয়ার (বিভিআর) মিসাইল বহন করতে সক্ষম। যেখানে কিনা চীনের এইচ-৬ স্ট্যাটিজিক বোম্বার বিমানের ম্যাক্সিমাম পেলোড ক্যাপাসিটি ৯ টন।
তবে আমেরিকার নতুন প্রজন্মের এফ-৩৫ জয়েন স্টাইক স্টেলথ জেট ফাইটারের মোট পেলোড ক্যাপাসিটি ৮,২০০ কেজি হলেও শুধু ‘ওয়েপন্স-বে’ তে এর ম্যাক্সিমাম পেলোড ক্যাপাসিটি ২,৬০০ কেজি এবং এফ-২২ র্যাপ্টারের ‘ওয়েপন্স-বে’ তে পেলোড ক্যাপাসিটি ২,২০০ কেজি। তাছাড়া স্টেলথ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমানে ওয়েপন্স-বে ছাড়া এক্সটার্নাল হার্ড পয়েন্টে অস্ত্র নিলে সেক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের স্টেলথ ক্যাপাবিলিটি বলতে তেমন কিছু ল থাকে না।
বিশ্বের সেরা ২০০ কিলমিটার রেঞ্জের মেটওর এয়ার টু এয়ার (বিভিআর) মিসাইল সমৃদ্ধ ফ্রান্সের এডভান্স রাফায়েল জেট ফাইটারের ম্যাক্সিমাম পে-লোড ক্যাপাসিটি ৯.৫ টন। ইউরোফাইটার টাইফুনের পে-লোড ক্যাপাসিটি ৯ টন। আবার রাশিয়ার এসইউ-৫৭ সুপার স্টিলথ এয়ার সুপিউরিটি জেট ফাইটারের পে-লোড ক্যাপাসিটি ৯ টন, এসইউ-৩৫এস সিরিজের জেট ফাইটারের পে-লোড ক্যাপাসিটি ৮ টন, মিগ-৩৫ এর পে-লোড ক্যাপাসিটি ৬.৫ টন এবং এসইউ-৩০ এসএমই জেট ফাইটারের পে-লোড ক্যাপাসিটি ৮ টন।
এদিকে সিঙ্গেল ইঞ্জিনের জেট ফাইটারের বিবেচনায় মার্কিন এফ-১৬ এর পে-লোড ক্যাপাসিটি ৭.৭ টন বা ৭,৭০০ কেজি। তাছাড়া সুইডিস গ্রীপেন-ই জেট ফাইটারের ম্যাক্সিমাম পে-লোড ক্যাপাসিটি ৫,৩০০ কেজি বা ৫.৩ টন, ভারতের তেজাস হাল লাইট জেট ফাইটারের পে-লোড ক্যাপাসিটি ৫,৭০০ কেজি বা ৫.৭ টন, চীন-পাকিস্তান জয়েন্ট প্রডাক্ট জেএফ-১৭ থাণ্ডার লাইট জেট ফাইটারের ম্যাক্সিমাম পে-লোড ক্যাপাসিটি ৫.৫ টন বা ৫,৫০০ কেজি এবং চীনের জে-১০ সিঙ্গেল ইঞ্জিন জেট ফাইটারের ম্যাক্সিমাম পে-লোড ক্যাপাসিটি ৭ টন বা ৭,০০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকতে পারে।
তবে বিশ্বের এভিয়েশন প্রযুক্তি নির্ভর অনেক দেশকে ছাপিয়ে নতুন প্রজন্মের কেএফ-২১ জেট ফাইটার সার্ভিসে আনতে যাচ্ছে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটি মুলত গত ২০২২ সালের ১৯শে জুলাই বিশ্বের চতুর্থ একক দেশ হিসেবে তাদের কেএফ-২১ নেক্সড জেনারেশন ফাইটার জেটের পরীক্ষামুলক সফল উড্ডয়ন শেষ করে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার দেয়া তথ্যমতে, ২,৯০০ কিলোমিটার রেঞ্জের কেএফ-২১ নেক্সড জেনারেশন যুদ্ধবিমান আনুমানিক ৩ হাজার কেজি পর্যন্ত পেলোড বা অস্ত্র ও মিসাইল ধারণ করতে সক্ষম।
(তথ্য সূত্র : ডিফেন্স রিসার্চ ফোরাম)
