নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমান সময়ে মাঝারি দামের স্মার্টফোন বাজারে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা। ব্যবহারকারীরা চায় কম দামে ভালো পারফরম্যান্স এবং আধুনিক ফিচারসহ ফ্ল্যাগশিপ ফোনের সব সুবিধা। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এসেছে ইনফিনিক্স হট ৬০ প্রো+। স্লিম ডিজাইন, হাই-রিফ্রেশ অ্যামোলেড ডিসপ্লে এবং কিছু অভিনব ফিচার ব্যবহারকারীদের দিচ্ছে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।

ডিজাইন ও বিল্ড: স্লিম ও আরামদায়ক : মাত্র ৫.৯৫ মিমি পুরুত্ব এবং ১৫৫ গ্রাম ওজনের ফোনটি হাতে নিলেই আলাদা মনে হয়। দীর্ঘ সময় ভিডিও দেখা বা গেম খেললেও হাত ভারী লাগে না। অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম আর কার্ভড অ্যামোলেড স্ক্রিন প্রিমিয়াম লুক দেয়। বিশেষ করে মোকো সাইবার গ্রিন লেদার ব্যাক স্টাইল যোগ করেছে। পেছনের হালো লাইট কল বা চার্জিং সময় জ্বলে উঠে ফোনটিকে আলাদা করে। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে ফোনটি বিশ্বের সবচেয়ে স্লিম ৩ডি কার্ভড স্ক্রিন স্মার্টফোন হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পেয়েছে।
ডিসপ্লে: তীক্ষ্ণ, স্মুথ ও উজ্জ্বল : ৬.৭৮ ইঞ্চির অ্যামোলেড ডিসপ্লে ফোনটির প্রধান আকর্ষণ। ১২২৪পি রেজ্যুলেশন, ১৪৪ হার্জ রিফ্রেশ রেট এবং সর্বোচ্চ ৪৫০০ নিটস ব্রাইটনেসে স্মার্টফোনে টেক্সট স্পষ্ট, ছবি মসৃণ এবং সূর্যালোকে স্পষ্ট দেখা যায়। চোখের সুরক্ষার জন্য আছে ডিসি ডিমিং, এআই আই কমফোর্ট এবং স্লিপ এইড মোড। দীর্ঘ সময় পড়া বা রাত জেগে স্ক্রল করলেও চোখে সমস্যাও কম হয়।

পারফরম্যান্স: শক্তিশালী ও স্মুথ : মিডিয়াটেক হেলিও জি২০০ চিপসেট, ৮ জিবি র্যাম (ভার্চুয়াল এক্সপানশন সহ) এবং সর্বোচ্চ ২৫৬ জিবি স্টোরেজের ফোনটি অ্যাপ চালানো, একসঙ্গে একাধিক কাজ এবং হালকা ভিডিও এডিটিং নির্বিঘ্নে করতে পারে। পাবজি মিডিয়াম সেটিংসে স্মুথ চলে।

ফোনটির গেমিং পারফরম্যান্সও বেশ ভালো। পাবজি-এর মতো গেম মিডিয়াম সেটিংসে স্মুথ চলে, যা গেমারদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ফোনটি ঠান্ডা রাখতে আছে ১১-লেয়ার কুলিং সিস্টেম এবং ভেপার চেম্বার। এছাড়া হার্ডওয়্যার জাইরোস্কোপ এবং ই-স্পোর্টস প্রো কন্ট্রোল ইঞ্জিন গেমিং অভিজ্ঞতাকে আরও দ্রুত এবং রেসপন্সিভ করেছে।
ব্যাটারি ও চার্জিং: টেকসই ও দ্রুত : স্লিম ডিজাইন সত্ত্বেও ফোনটিতে আছে ৫১৬০ এমএএইচ ব্যাটারি, যা একদিনের বেশি চলে। ৪৫ওয়াট ফাস্ট চার্জার দিয়ে মাত্র ২৫ মিনিটে ৫০% চার্জ হয়, আর শতভাগ চার্জ দিতে সময় লাগে এক ঘণ্টারও কম। ইনফিনিক্সের দাবি, বিশেষ নন-সিলিকন ডোপিং প্রযুক্তির কারণে ব্যাটারি পাঁচ বছর পর্যন্ত টেকসই থাকবে।
ক্যামেরা : সনি আইএমএক্স৮৮২ ৫০ মেগাপিক্সেল সেন্সর দিয়ে তোলা ছবি দিনে বেশ স্পষ্ট আর ন্যাচারাল দেখায়। এমনকি কম আলোতেও বেশ ভালো ছবি তোলা যায়। ভিডিও নির্মাতাদের জন্য রয়েছে ভ্লগ ওয়ান-ক্লিক ভিডিও মোড, যা ছোট ছোট ক্লিপকে সহজেই একটি ভিডিওতে পরিণত করে।
তবে ক্যামেরা সেটআপ সীমিত—আল্ট্রা-ওয়াইড বা টেলিফটো নেই। রাতের ছবি কিছুটা নয়েজি হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া বা দৈনন্দিন ছবির জন্য যথেষ্ট, কিন্তু ফটোগ্রাফি প্রেমীদের চাহিদা পুরোপুরি মেটাবে না।
সফটওয়্যার ও অন্যান্য ফিচার : ফোনটিতে আছে অ্যান্ড্রয়েড ১৫-এর উপর এক্সওএস ১৫। ইন্টারফেস মসৃণ এবং ফিচার সমৃদ্ধ—সার্কেল টু সার্চ, কুইকশেয়ার এবং বিভিন্ন এআই টুলস রয়েছে। কিছু ব্লটওয়্যার থাকলেও তা সহজে সরানো বা বন্ধ করা যায়। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—ইনফিনিক্স দিচ্ছে ৩ বছরের অ্যান্ড্রয়েড আপডেট এবং ৫ বছরের সিকিউরিটি প্যাচ।
অতিরিক্ত ফিচারের মধ্যে রয়েছে ডুয়াল জেবিএল স্পিকার, এনএফসি টাচ ট্রান্সফার, আন্ডার-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং আইআর ব্লাস্টার। তবে ৫জি নেই, যা ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা সীমাবদ্ধতা তৈরি করতে পারে।
অলরাউন্ডার : কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা স্বত্বেও ইনফিনিক্স হট ৬০ প্রো+ তে রয়েছে স্লিম প্রিমিয়াম ডিজাইন, অসাধারণ ডিসপ্লে, নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্স, দ্রুত চার্জিং এবং দীর্ঘমেয়াদি সফটওয়্যার সাপোর্ট।শিক্ষার্থী, পেশাজীবী বা যেকোনো ব্যবহারকারী যারা নির্ভরযোগ্য ও আকর্ষণীয় স্মার্টফোন খুঁজছেন, তাদের জন্য হট ৬০ প্রো+ এখন অন্যতম সেরা বিকল্প হতে পারে।