চাকরির ফাঁদে ফেলে নারী  ধর্ষণ : চাঁদপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা!

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর নার্সিং ইনস্টিটিউট উচ্চমান সহকারী মো. আল-আমিন সিকদারের (৩৬) এর বিরুদ্ধে নারী ধর্ষনের মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষিতা কিশোরীর মা। আউটসোর্সিংয়ের চাকরির ফাঁদে পড়ে ধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী একের পর এক যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটালেও এতোদিনে প্রকাশ হয়নি। তবে সর্বশেষ এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন আল-আমিন নামের ওই উচ্চমান সহকারী।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গত ১৮ মে অফিস সহায়ক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৫ জুন আল-আমিনের নামে মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের মা। অভিযুক্ত আল-আমিন সিকদার চাঁদপুর শহরের কাঁচা কলোনি এলাকার মো. নূর নবীর ছেলে।


বিজ্ঞাপন

মামলার বিবরণ ও ভিকটিমের গণমাধ্যম কে দেওয়া জবানবন্দি থেকে জানা গেছে, এক বছর আগে যৌন নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী চাঁদপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে চাকরি নেয়।

তার দায়িত্ব ছিল ইনস্টিটিউটের নিচতলায় উচ্চমান সহকারী আল-আমিন সিকদারের কক্ষে। তখন থেকেই তিনি ভিকটিমকে কারণে-অকারণে কাছাকাছি আসা এবং কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এরপর গত এপ্রিলের বেতন নেওয়ার জন্য ভিকটিমকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করেন।

এই ঘটনায় কিশোরীর মা মামলা করলে এবং মামলার আর্জিতে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ লিখলেও বিচারকের কাছে এবং পৃথক বক্তব্যে ভিকটিম তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলে শিকার করে।

ভিকটিমের বক্তব্যের আলোকে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী গত ৫ জুন ভিকটিমের বক্তব্য গ্রহণপূর্বক তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়। পাশাপাশি আগামী ২৬ জুনের মধ্যে ডাক্তারি রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে বলে বিচারক আদেশ দেন।

আরেক বক্তব্যে ভিকটিম জানায়, সে চাকরিতে যোগদানের পর এক মাস পর্যন্ত পরিবেশ ভালো ছিল। কিন্তু এক মাস পর থেকেই অভিযুক্ত আল-আমিন তাকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। এরপর তাকে অফিসের বাথরুমে এবং অফিসের কাজের কথা বলে লঞ্চে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এছাড়াও ভিকটিমকে দুর্বল করার জন্য তিনি পূর্বে যেসব নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেছেন, সেসব ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে উত্তেজিত করেন এবং ধর্ষণের জন্য সম্মত করান।

চাঁদপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান। তার কাছে অভিযুক্ত উচ্চমান সহকারী আল-আমিন সিকদারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের দুটি মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কর্মী কে জানান, দুটি মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এখনই জেনেছেন। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে, অভিযুক্ত উচ্চমান সহকারী আল-আমিন সিকদারের নামে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে চাঁদপুরের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর লেখা পোস্ট করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।

মামলাটি ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন এবং মামলার চার্জশিট দাখিল করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ওই মামলায় ৪ আসামির মধ্যে আল-আমিন সিকদার প্রধান আসামি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ গণমাধ্যম কে জানান , আল-আমিন সিকদারের নামে প্রেসক্লাবের পক্ষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলাটি চলমান।

এ ধরণের অপকর্ম করে সমাজে যারা অনাচার সৃষ্টি করেন এবং তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করেন, নার্সিং ইনস্টিটিউটের মতো জায়গায় নারীদের যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *