১ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের মামলা

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ   এক কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ৪ বছর পর অবশেষে বিএনপি নেতা ইমরুল কায়েস সুমন (৪০) ও সাউথইস্ট ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক মোশতাক আহমেদ (৪২) এবং ব্যাংকের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২১ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধর বাদী হয়ে এ মামলা করেন।


বিজ্ঞাপন

মামলার আসামিরা হলেন সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখার অপারেশন ম্যানেজার নজরুল ইসলাম (৫৩), ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার শামীম আহমেদ (৩৬) এবং ব্যাংকের ট্রেইনি ক্যাশ অফিসার ইমরান (৩২)।। বৃহস্পতিবার ২২ জুন, বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খায়রুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামি ইমরুল কায়েস সুমন মেসার্স কায়েস এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার বিমানবন্দর সড়কের পৌরসভার রহিমপুর এলাকার আব্দুল মহিত বিশ্বাসের ছেলে। আর সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক মোশতাক আহমেদ রাজশাহীর তেরখাদিয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার ফারুখ আহমেদের ছেলে।

দুদক সুত্র ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখার অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজসে নিজেদের স্বার্থে কোনো প্রকার নগদ টাকা গ্রহণ না করেই চার কিস্তিতে ব্যবসায়ী ইমরুল কায়েস সুমনকে ৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার পে-অর্ডার দেন। অনেক দেন দরবারের পর ইমরুল ব্যাংকটিতে এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা জমা দেন।

এরপর আর কোনো টাকা না দিয়েই তিনি ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর আত্মগোপনে যান। পরে ব্যাংক তার অন্যান্য হিসেবসহ বিভিন্নখাত থেকে আরো ৩৮ লাখ ২৫ হাজার ৩২৮ টাকা আদায় করে।সূত্রটি  আরও  জানায়, দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে পে-অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে প্রমাণ পায় দুদক। এ ছাড়া ব্যবসায়ী ইমরুলের পে-অর্ডার ভাঙিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগও প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। এসব প্রমাণ পাওয়ায় তিনি ও সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখার ৪ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।

সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পরিষদসহ ঈশ্বরদী শাখা সূত্র মতে, বিএনপি নেতা ইমরুল কায়েস সুমন মেসার্স কায়েস এন্টারপ্রাইজ এর সত্ত্বাধিকারী। তিনি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী, আটঘড়িয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ) ও রবিসহ ইউনিলিভার বাংলাদেশের ডিলারসহ প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ছিলেন।

ব্যাংকটিতে সুমনের হিসাব নম্বরে টাকা লেনদেনের সূত্র ধরেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুমনের সখ্যতা গড়ে ওঠে। ব্যাংকের ওই চার কর্মকর্তা ব্যক্তি নিজেরা আর্থিক লাভের আশায় পরস্পরের যোগসাজসে ব্যবসায়ী ইমরুলকে কোটি কোটি টাকা প্রদান করতেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খায়রুল হক গণমাধ্যম কে  বলেন, সাউথইস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছিল। আদালত মামলাটি গত বছর দুদকে প্রেরণ করেন। এরপর মামলার অধিকর তদন্ত করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজছে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আসামিরা সবাই পলাতক। যেকোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে। তবে আসামি ইমরুল কায়েস সুমন যেন দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *